পৃথিবীর বড় বড় মিঠা পানির উৎস শুকিয়ে যাচ্ছে


আন্তর্জাতিক ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 19-05-2023

পৃথিবীর বড় বড় মিঠা পানির উৎস শুকিয়ে যাচ্ছে

পৃথিবীর মিঠা পানির প্রায় ৮৭ শতাংশই সঞ্চয় করে রাখে প্রাকৃতিক হ্রদ এবং জলাধারগুলো। ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিক থেকে আশঙ্কাজনকভাবে বিশ্বের অর্ধেকের বেশি বড় হ্রদ ও জলাধার শুকিয়ে যাচ্ছে। জলবায়ুর এমন পরিবর্তনে কৃষি, জলবিদ্যুৎ ও মানুষের ব্যবহারের পানি নিয়ে উদ্বেগ তীব্রতর হয়েছে। নতুন একটি গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। আল-জাজিরা

আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল বৃহস্পতিবার (১৮ মে) জানিয়েছে, ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যবর্তী কাস্পিয়ান সাগর থেকে শুরু করে দক্ষিণ আমেরিকার টিটিকাকা হ্রদ পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিঠা পানির উৎসগুলো ক্রমাগত শুকিয়ে যাচ্ছে। প্রায় তিন দশক ধরে প্রতি বছর ২২ গিগাটন হারে পানি শুকিয়েছে।

সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, মধ্য এশিয়ার আরাল সাগর এবং মধ্যপ্রাচ্যের মৃত সাগরের মতো হ্রদগুলো শুকিয়ে গেছে। আফগানিস্তান, মিশর ও মঙ্গোলিয়ার হ্রদগুলো ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা বায়ুমণ্ডলে পানির ক্ষয় বাড়িয়ে তুলতে পারে।

অভ্যন্তরীণ তিব্বতি মালভূমির মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাঁধ নির্মাণের ফলে প্রায়শই হ্রদের এক চতুর্থাংশে পানির স্তর বৃদ্ধি পেয়েছিল।

পৃথিবীর মিঠা পানির প্রায় ৮৭ শতাংশ পানিই সঞ্চয় করে রাখে প্রাকৃতিক হ্রদ এবং জলাধারগুলো। যদিও পৃথিবীপৃষ্ঠের মাত্র ৩ শতাংশজুড়ে এগুলোর অবস্থান। ১৯৯২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে সংগৃহীত স্যাটেলাইট ইমেজ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

ভার্জিনিয়া ইউনিভার্সিটির সারফেস হাইড্রোলজিস্ট ফাংফাং ইয়াও বলেন, প্রাকৃতিক হ্রদের ৫৬ শতাংশ কমে যাওয়ার কারণ মূলত জলবায়ু উষ্ণতা এবং মানুষের ক্রমাগত ব্যবহার।

জলবায়ু বিজ্ঞানীরা মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের শুষ্ক অঞ্চলগুলো আরও শুষ্ক হয়ে উঠবে এবং আর্দ্র অঞ্চলগুলো আরও আর্দ্র হয়ে উঠবে। তবে আর্দ্র অঞ্চলেও উল্লেখযোগ্য হারে পানি কমে যাচ্ছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।

এই পরিস্থিতিকে উপেক্ষা করা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেছেন সারফেস হাইড্রোলজিস্ট ইয়াও।

বিশ্বের ২ হাজার বড় হ্রদ নিয়ে করা নতুন এ গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, মানুষের ক্রমাগত ব্যবহার, বৃষ্টিপাত প্রবাহের পরিবর্তন, অবক্ষয় ও ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে হ্রদের পানির স্তর কমে যাচ্ছে। ১৯৯২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ৫৩ শতাংশ পানি কমে গেছে।

সম্প্রতি স্পেন জানিয়েছে, কাতালোনিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জলাধারগুলো কয়েক মাসের খরার পরে প্রায় মাত্র ২৬ শতাংশজুড়ে পানিতে পূর্ণ হয়েছে। যেখানে ২০২২ সালেও খরার পরে পানি ছিল ৫৮ শতাংশ।

বিজ্ঞানীরা মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সর্বোচ্চ বিপর্যয়কর পরিণতি এড়াতে বৈশ্বিক উষ্ণতা ২.৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট হারে ছাড়িয়ে যাওয়া রোধ করা প্রয়োজন। বর্তমানে প্রায় ১.৯ ফারেনহাইট হারে উষ্ণ হচ্ছে।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]