রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ২০১৪ সালের পরে এই প্রথম ১০০ ডলার ছাড়াল তেলের দাম।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের ডোনবাসে বিশেষ সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই লন্ডনে তেলের দাম ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে গেছে।
বৈশ্বিক তেল বাণিজ্যে রাশিয়া একটি মুখ্য উৎস। ইউরোপের চার ভাগের এক ভাগ জ্বালানি তেলের যোগান মূলত রাশিয়া থেকেই পূরণ করা হয়। অন্যদিকে ইউরোপে তিন ভাগের এক ভাগ গ্যাসের যোগানও রাশিয়া থেকে আসে।
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে ৯৯ ডলারে ওঠে।
এ ব্যাপারে ফিডেলিটি ইন্টারন্যাশনালের বিনিয়োগ পরিচালক মাইক কুরি বলেন, ইউক্রেন সংকট, যুক্তরাষ্ট্রে বৈরী আবহাওয়া, বিনিয়োগের অভাবে জ্বালানি তেলের ব্যারেলপ্রতি দাম ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ব্রেন্ট ক্রুড তেলের ব্যারেলপ্রতি দাম ৯৮ দশমিক ২১ মার্কিন ডলারে উঠেছিল, যা বিগত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। একই দিনে ডব্লিউটিআই ক্রুড অয়েল ৯৬ দশমিক ৮২ ডলারে উন্নীত হয়েছিল।
এছাড়াও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সরবরাহ সংকট সৃষ্টি হতে পারে খাদ্যপণ্যের বিশ্ববাজারে। কৃষ্ণসাগরের বিভিন্ন বন্দর দিয়ে খাদ্যপণ্য রফতানি করে থাকে বিশ্বের প্রধান খাদ্য উৎপাদনকারী দেশ রাশিয়া, ইউক্রেন, কাজাখস্তান ও রোমানিয়া।
মূলত বৈশ্বিক গম রফতানির ২৯ শতাংশই আসে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে। এ ছাড়া বৈশ্বিক ভুট্টা রফতানির ১৯ শতাংশ ও সূর্যমুখী তেল রফতানির ৮০ শতাংশই করে এ দুই দেশ।
ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ, যেকোনো ধরনের সামরিক হস্তক্ষেপ খাদ্যশস্যের রফতানিপ্রবাহকে ভয়াবহভাবে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। সংকটকালে সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষ্ণ সাগরীয় দেশগুলোর বিকল্প খুঁজে পেতে মরিয়া শীর্ষ ভোক্তা দেশগুলো।
শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে গমের ভবিষ্যৎ সরবরাহ মূল্য ২ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া ভুট্টার বাজারদর উঠেছে সাত মাসের সর্বোচ্চে। সয়াবিনের দামও স্থিতিশীল পর্যায়ে বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় প্রধান এ তিন খাদ্যশস্যের দাম প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে।
মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্যের চাহিদা বাড়ছে লাফিয়ে। কিন্তু সে অনুপাতে উৎপাদন নেই। তার ওপর রাজনৈতিক অস্থিরতা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
রাজশাহীর সময় /এএইচ