মশা তাড়ানোর কয়েল শরীরের জন্য যথেষ্ট ক্ষতিকর, এর আগে তা বহু বার বলেছেন চিকিৎসকরা। সম্প্রতি একটি গবেষণায় উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। গবেষণা জানাচ্ছে, কয়েল থেকে নির্গত ধোঁয়া ফুসফুসের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। দীর্ঘ দিন ধরে এই ধোঁয়া শরীরে প্রবেশ করার ফলে ‘ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজ়িজ়’ (সিওপিডি) হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। এর ঝুঁকি ধূমপান করার সমান, বা কোনও ক্ষেত্রে আরও বেশি। তাই কয়েল ব্যবহার করতে বারণ করেন চিকিৎসকরা।
‘সিওপিডি’ রোগে বিশ্বের প্রায় ৩০ কোটি মানুষ আক্রান্ত। অত্যধিক ধূমপান, রান্নাঘরের ধোঁয়া, দূষণ— এত দিন সিওপিডি-র নেপথ্যে ছিল এই কারণগুলি। সম্প্রতি সেই তালিকায় যুক্ত হল নতুন একটি কারণ। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, দেশে সিওপিডি রোগীর সংখ্যা হু-হু করে বাড়ছে। অথচ এই রোগ নিয়ে সচেতনতা নেই অনেকেরই।
‘ব্রিটিশ মেডিক্যাল’ নামক একটি পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ২০১৯ সালে ভারতে সিওপিডিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার ছিল প্রতি ১০ হাজারে ৯৮ জন। আমেরিকায় সেখানে এর তিন গুণ বেশি। ধূমপান এই রোগের অন্যতম কারণ হলেও, মশা তাড়ানোর কয়েল সিগারেটের চেয়েও বেশি ভয়ঙ্কর বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। কয়েলের ধোঁয়ায় শ্বাস নেওয়া ৫০ থেকে ১০০টি সিগারেট খাওয়ার সমান। তাই ঝুঁকি এড়াতে এ ধরনের কয়েল ব্যবহার বন্ধ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কারণ এক বার সিওপিডি বাসা বাঁধলে জীবনের ঝুঁকি থেকে যায়। সহজে এই অসুখ থেকে মুক্তি পাওয়াও সম্ভব হয় না।
সিওপিডি–র শুরুতে লাগাতার কাশি ও অল্পস্বল্প শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। বেশি খাটাখাটনি করলে তা আরও বেড়ে যায়। পরের দিকে শারীরিক পরিশ্রম না করলেও দমের ঘাটতি হতে থাকে। ফুসফুসের প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমতে শুরু করে। ঋতু পরিবর্তনের সময় ঠান্ডা লাগার প্রবণতা বেড়ে যায়, বুকে কফ বসলে শুরু হয় প্রবল শ্বাসকষ্ট। প্রথম দিকে সে কষ্ট ওষুধে কমে৷ কিন্তু পরে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা করতে হয়। সুস্থ থাকতে কয়েল ব্যবহার বন্ধ করা জরুরি।