শিক্ষার্থীদের জুতাপেটা করলেন প্রধান শিক্ষক


অনলাইন ডেস্ক : , আপডেট করা হয়েছে : 10-05-2023

শিক্ষার্থীদের জুতাপেটা করলেন প্রধান শিক্ষক

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০ থেকে ২২ জন শিক্ষার্থীকে শ্রণিকক্ষে জুতাপেটা করার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের রিয়াজউদ্দিন মাদবর কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে গিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিদ্যালয় ছুটি হওয়ার কিছুক্ষণ আগেই শিক্ষার্থীরা উপরতলা থেকে নিচে নামে। তখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে তার পায়ে থাকা জুতা খুলে নিক্ষেপ করেন। ভয় পেয়ে ছাত্ররা দৌড়ে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করলে শিক্ষক হাফিজুর রহমান সেখানে গিয়ে ৫ম শ্রেণির ছাত্র জাহিদ, ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র আরিফ, ইয়াছিন, উসমান গনি, এনায়েতসহ প্রায় ২০ জন ছাত্রকে পর্যায়ক্রমে ডেকে ডেকে তার জুতা দিয়ে মারধর করেন।

এই ঘটনায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে এবং এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী জাহিদ বলেন, আমাদের হেড স্যার হাফিজুর রহমান আজ দুপুরের আমিসহ প্রায় ২০ জনকে জুতা দিয়ে পিটিয়েছে। আমাকে জুতা দিয়ে দুইবার মারছে আর সবাইকে পিঠে একবার মারছে।

বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আল আমিন বলেন, আমরা ছুটির জন্য নিচে গেছিলাম। তারপর ক্লাসে গিয়ে দেখি হেড স্যার ওদের জুতা দিয়ে পিটাইতেছে।

৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান বলেন, আজ বেলা আনুমানিক ৩টার সময় আমার ছোট ভাই এসে কান্নাকাটি করে জানায় হেড স্যার হাফিজ স্যার ওদেরকে জুতা দিয়ে পিটাইছে। পরে সবার কাছ থেকে জানতে পারি ছুটির কিছুক্ষণ আগে ওরা নিচে নামায় হেড স্যার ওদের দিকে জুতা নিক্ষেপ করে, পরে ওরা ভয়ে ক্লাসরুমে গেলে সেখানে ওদের সবাইকে জুতা দিয়ে পিটাইছে।

এই ঘটনায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম গিয়াস মাতুব্বরকে ফোন দিলে তিনি বলেন, হেড স্যারের একটু শরীর খারাপ ছিল বলে শুনেছি। বিষয়টা জানতে পৌনে ৪টার দিকে আমি স্যারকে ফোন করি, স্যার বলল 'পোলাপানে কেচাকেচি করছে, আমি রাগের মাথায় এই অন্যায় করছি। এখন যেভাবে হোক, এটা বিচার করেন, আমি মেনে নেব।'

প্রধান শিক্ষক তার ছাত্রদের জুতা দিয়ে পিটাতে পারেন কি না প্রশ্নের উত্তরে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বলেন, 'সেটাতো পারে না, এখন আমরা এক জায়গায় বসে প্রয়োজনে মুচলেকা নেব। যেন তিনি আর কোনোদিন এই ধরনের কাজ করতে না পারেন। যদি করে তাহলে চাকরি থেকে অব্যাহতির ব্যবস্থা করে দেব। এখন ঘটনা হইলো উনি খুব ভয় পাইছে। এটা আর বাড়ানোর দরকার নেই।'

তবে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজুর রহমানকে ফোন দিয়ে জানতে চাইলে তিনি ঘটনাটি অস্বীকার করেন।

এই ঘটনায় শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মুন্সী রুহুল আসলাম বলেন, 'আমাকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে কেউ এমন অভিযোগ দেয়নি। ঘটনাটি আমি শুনেছি সন্ধ্যায়। একজন সাংবাদিক জানিয়েছে। একজনকে আগামীকাল স্কুলে গিয়ে তদন্ত করার জন্য বলেছি। যদি এর সত্যতা মেলে, তাহলে অবশ্যই আমরা বিভাগীয় ব্যবস্থা নেব।'


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]