মহিলাদের শারীরিক গঠন পুরুষদের থেকে আলাদা। কিন্তু এমনটা নয় যে, মহিলাদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি নেই। তুলনামূলকভাবে কম হলেও ঝুঁকি রয়েছে। ঋতুস্রাবের সময় ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন হরমোনের ক্ষয়ের কারণে মহিলাদের মধ্যে হৃদরোগের কম। কিন্তু মেনোপজ বা ঋতুবন্ধের আগে মহিলাদের মধ্যে করোনারি আর্টারি ডিজিজের ঝুঁকি বাড়ে।
যদিও ২০ থেকে ৪০ বা ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মহিলাদের মধ্যে হৃদরোগের আক্রান্ত হওয়ার হার কম। যদি ৬০-এ কোটায় পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দেয় হৃদরোগ। এমনকী ৫০-এর পর থেকেই দেহে নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়।
যদিও করোনারি আর্টারি ডিজিজই যে মহিলাদের উপর প্রভাব ফেলতে পারে, এমনটা নয়। এমনকী অল্প বয়সেও মহিলাদের মধ্যে হৃদরোগের নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তাছাড়া উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে সেখান থেকেও হৃদরোগের ঝুঁকি তৈরি হয়। আবার ধূমপানের বদঅভ্যাসও হৃদরোগের পিছনে দায়ী। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, মানসিক চাপের কারণেও মহিলাদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। আবার অপুষ্টিজনিত কারণও দায়ী।
লাইফস্টাইলের দিকে বিশেষ নজর না দিলেও হার্টের সমস্যা তৈরি হতে পারে। আপনি যদি নিয়মিত ফাস্ট ফুড খান, অনিদ্রার সমস্যায় ভোগেন, তাহলে হার্টের উপর প্রভাব পড়ে। পিত্জা এবং বার্গারের মতো ফাস্ট ফুড ওবেসিটি এবং মেটাবলিক সিন্ড্রোমের মতো সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে। একই সমস্যা দেখা দিতে পারে, যদি অতিরিক্ত পরিমাণে তেলে ভাজাভুজি খাবার খান।
মহিলাদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাওয়ার আরও একটি কারণ হল শরীরচর্চায় অনীহা। এমন অনেক মহিলাই রয়েছেন, যাঁরা বাড়ির কাজকর্মের বাইরে শরীরচর্চা করেন না। আবার এমনও কিছু মহিলা রয়েছেন, যাঁরা দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে কাজ করেন। এই দু’ধরনের অবস্থাই হার্টের জন্য ক্ষতিকারক। হার্টকে ভাল রাখতে গেলে আপনাকে নিয়মিত যোগব্যায়াম করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আপনি যদি ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন, তাহলে একাধিক রোগের ঝুঁকি কমে যায়। তার মধ্যে হৃদরোগও রয়েছে।
অনেক মহিলার ক্ষেত্রে প্রেগনেন্সিতে হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। তবে, চিকিত্সার মধ্যে থাকলে এই ধরনের ঝুঁকি কমানো যায়। কিন্তু মহিলাদের বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কার্ডিওভাসকুলার রোগও বাড়তে থাকে। তাই শরীরে ছোটখাটো পরিবর্তন হলেই সতর্ক হওয়া দরকার। সুষম আহার, নিয়মিত শরীর আর স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইলই হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে সাহায্য করে।