নিউ ইয়র্কে জমকালো আয়োজনে দু'দিনব্যাপী রবীন্দ্র উৎসব শুরু


ইমা এলিস, নিউ ইয়র্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 07-05-2023

নিউ ইয়র্কে জমকালো আয়োজনে দু'দিনব্যাপী রবীন্দ্র উৎসব শুরু

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জমকালো আয়োজনে দু'দিনব্যাপী রবীন্দ্র উৎসব শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার (৬ মে নিউ ইয়র্কের জামাইকার পারফরমিং আর্টস সেন্টারে দু'দিনব্যাপী উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত সঙ্গীতজ্ঞ ড. রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ পুরস্কার পদ্মভূষণপ্রাপ্ত নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তিনি ভিডিও বার্তায় তার বক্তব্য দেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কন্সাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম এবং ভারতের কনসাল জেনারেল রণধীর জয়সুয়াল। যুক্তরাষ্ট্রে বঙ্গ সম্মেলনখ্যাত ভারতীয় বাঙালিদের সর্ববৃহৎ সংগঠন বঙ্গ সংস্কৃতি সংঘ বা কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল-সিএবি এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠান বাংলা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড সহযোগী সংগঠন হিসেবে যুক্ত হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন আয়োজকবৃন্দ। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।

অনুষ্ঠানের বিভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থিত ছিলেন একুশ পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক ড. জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ও মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরুন নবী, ভারতের রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ভাষাবিজ্ঞানী ড. পবিত্র সরকার, ভারতীয় লেখক আলোলিকা মুখোপাধ্যায়, ভারতের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত গীতিকার, প্রাবন্ধিক ও বক্তা চন্দ্রিল ভট্টাচার্য, বাংলাদেশের স্বনামখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। এছাড়াও রবীন্দ্রনাথের বংশধর, শিল্প-ইতিহাসবিদ, খ্যাতিমান গ্যালারিস্ট সুন্দরম ঠাকুরকে উৎসবে উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও ভারত, বাংলাদেশ, ব্রিটেন, জার্মানী, কানাডা, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত: ২৫টি অঙ্গরাজ্য থেকে কবি, লেখক, সাহিত্যিক, শিল্পী, কলাকুশলী ও রবীন্দ্র অনুরাগীরা অংশ নেন। বাংলাদেশি, ভারতীয়দের অন্তত: ১৫টি সংগঠন উৎসবে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে ভিন্ন ভাষাভাষী বিদেশি সংগঠনও পারফর্ম করেন।

নোবেলজয়ী প্রথম বাঙালি, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দর্শন, চিন্তা-ভাবনা, আদর্শ অভিবাসী জীবনে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যই মূল লক্ষ্য বলে জানান আয়োজকবৃন্দ। প্রথম দিনের রবীন্দ্র উৎসবে অনেক কিছুই ছিল ব্যতিক্রমী আয়োজন যা উৎসবকে ভিন্নমাত্রা এনে দেয়।

প্রথম দিনের উৎসবে বাংলাদেশি আমেরিকান শিল্পীরা রবি ঠাকুরকে শৈল্পিকভাবে তুলে ধরেন তাদের চারুশিল্পের মাধ্যমে। অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিজস্ব আঁকা ছবিও প্রদর্শনী হয়। উৎসব প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয় রবি ঠাকুরের একটি ভাস্কর্য। নতুন প্রজন্মের কাছে রবীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথ তর্কে-বিতর্কে এবং বিদেশিদের চোখে রবীন্দ্রনাথ শীর্ষক তিনটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

প্রথম দিনের উৎসবে সুমন মুখোপাধ্যায়ের চলচ্চিত্র ‘শেষের কবিতা’ এবং ‘তাসের দেশ’ ও ‘রক্ত করবী’, ‘ভানু সিংহের পদাবলী’ গীতি নৃত্যনাট্য নৃত্যনাট্য পরিবেশিত হয়। স্ত্রীর পত্র ও মিছে কোলাহল নামে দুটি নাটক মঞ্চস্থ হয়। রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেন নিউ ইয়র্কের শ্রী চিন্ময় সেন্টারের তিরিশজন বিদেশি শিল্পী।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমর সৃষ্টি, শ্রেষ্ঠ চরিত্রগুলো নিয়ে প্রীতি বিতর্ক, রবি ঠাকুরের জীবনে নারীর ভূমিকা শীর্ষক দুটি অনুষ্ঠান ‘ওরা সন্ধ্যার মেঘমালা’ এবং ‘কার মিলন চাও বিরহী’ পরিবেশিত হবে।

শনিবার দুপুরে সাহিত্য একাডেমির সহযোগিতায় রবীন্দ্র সাহিত্য সম্মেলনের উদবোধন করেন জোতিপ্রকাশ দত্ত। প্রধান অতিথি ছিলেন ড নুরুন নবী। মৃদুল আহমেদের উপস্থাপনায় আমার রবীন্দ্রনাথ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন সোনিয়া কাদের, এবিএম সালেহ উদ্দিন, পলি শাহিনা, আবু সাঈদ রতন, লায়লা ফারজানা ও শেলী জামান খান। রবীন্দ্রনাথের বিজ্ঞান ও চিন্তাহম নিয়ে আলোচনা করেন ড আশরাফ আহমেদ। সঙ্গীত ও কথামালায় রবীন্দ্রনাথের বাউল গানের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন মাহমুদ হোসেন দুলু, গীতাঞ্জলী ও নোবেল নিয়ে আলোচনা করেন সউদ চৌধুরী, আব্দুল্ললাহ জাহিদ আলোচনা করেন আমেরিকায় রবীন্দ্রনাথ। মনিজা রহমানের উপস্থাপনায় রবীন্দ্রনাথের চিঠিপত্র নিয়ে আলোচনা করেন মঞ্জুর আহমেদ।

মনজুর কাদেরের পরিচালনায় কবিতা পাঠে অংশ নেন-শামস আল মমীন, কাজী আতিক, রানু ফেরদৌস, ফারহানা ইলিয়াস তুলি, নীরা কাদরী, এইচবি রিতা, রওশন হাসান, খালেদ শরফুদ্দিন, শামস চৌধুরী রুশো, ইশতিয়াক আহমেদ রুপু, নোয়ার সেলিম, সুরীত বড়ুয়া, বেঞ্জির শিকদার, সালেহীন সাজু, লুৎফা হক ও তাহমিনা খান, ফারহানা হোসেন, ভায়লা সালিনা, সোহানা নাজনীন, সবিতা দাস, মিয়া আস্কির, সুলতানা ফিরদৌসী, রুপা খানম ও তামান্না আহমেদ।

উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানের শুরুতেই তিন দেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হলেও সবার শেষে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করায় উপস্থিত দর্শকদের মাঝে দৃষ্টিকটু মনে হয়েছে বলে অনেকেই উল্লেখ করেছেন। 


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]