ইমা এলিস/ বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে ৫০ বছরের অংশীদারত্ব উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বক্তব্য প্রদানের সময় বিশ্বব্যাংকের সদরদপ্তরের সামনে বিএনপির ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ প্রদান করেছেন। স্থানীয় সময় সোমবার (১ মে) সকাল পৌনে ৮টার দিকে ওয়াশিংটন ডিসির বিশ্বব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ শুরুর শুরুতেই উভয় দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের সভাপতিসহ উভয় দলের ৫ জন আহত হয়েছেন। উক্ত ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওয়াশিংটন ডিসি পুলিশ উভয় দলের ৩ সমর্থকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যান। পরে দলের নেতাদের হস্তক্ষেপে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।
প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে ৫০ বছরের অংশীদারত্ব উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগদানের কর্মসূচি ঘোষনার পর যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগ সোমবার সকালে বিশ্বব্যাংকের সামনে জয়বাংলা সমাবেশের আহাবান করেন এবং একই সময়ে একই স্থানে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিও প্রতিরোধ সমাবেশের ডাক দেন। তাদের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রোববার মধ্যরাত থেকেই উভয় দলের নেতা-কর্মীরা ওয়াশিংটন ডিসিতে আসতে শুরু করেন। সকাল ৭ মধ্যেই উভয় দলের নেতা-কর্মীরা বিশ্বব্যাংকের সামনে তাদের অবস্থান নিয়ে নানা ধরণের শ্লোগান দেওয়া শুরু করেন। দু’দলের অনুষ্ঠান সকাল নয়টার সময় শুরু হবার কথা থাকলেও সকাল পৌনে ৮টার দিকে অশোভনীয় ভাষায় শ্লোগান শুরু হলে উভয় দলের সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ব্যানার নিয়ে টানা হ্যাচড়াসহ সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে কিলঘুষির পর্যায়ে পৌঁছালে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও তার স্ত্রী আ.লীগের সদস্য শাহানারা রহমান, খোরশেদ খন্দকার ও আলী গজনবী এবং বিএনপি নেতা মোশারফ হোসেন সবুজ আহত হয় বলের দলের নেতৃবৃন্দরা জানিয়েছে। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের সভাপতি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে ৫০ বছরের অংশীদারত্ব উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য এবারে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে প্রচুর সংখ্যক বিএনপির নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহন করেন। নিউ ইয়র্ক ও মেট্রো ওয়াশিংটন ডিসি তথা ভার্জিনিয়া, ম্যারিল্যান্ড ও ওয়াশিংটন ডিসি ছাড়াও নিউ ইয়র্ক স্টেট, নিউ ইয়র্ক মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর, নিউ জার্সি স্টেট সাউথ ও নর্থ, পেনসিলভানিয়া, কানেকটিকাট, মিশিগান, জর্জিয়া, নিউ ইংল্যান্ড (বোস্টন), ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, শিকাগো, টেক্সাস, ওহাইও ও ইলিনয়স বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষীভ সমাবেশে অংশ নেন। তারা সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতাকর্মিরা বিএনপির ডাকা প্রতিরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ প্রতিহতের ডাক দিয়ে একই রাস্তার অপর প্রান্তে মুখোমুখি অবস্থান নিলে জয়বাংলা সমাবেশ শুরু করেন এতে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে স্বৈরাচার, গণবিরোধী ও অবৈধ প্রধানমন্ত্রী বলে শ্লোগান দিতে থাকেন।
এদিকে, বিএনপির চেয়ে আওয়ামী লীগের লোকজনের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। তবে তাদের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে দেওয়া স্লোগান বিএনপির ব্যাপক স্লোগানের মুখে চাপা পড়ে যায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনির্বাচিত ও অবৈধ প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করে বিএনপি নেতারা শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে অরুচিকর শ্লোগান দেওয়া শুরু করলে আওয়ামীলীগের কর্মিরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি নেতারা বলেন, গত কয়েকদফা অগণতান্ত্রিক ও প্রহসনের নির্বাচনে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর দাবিদার শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাংকে এসে ভাষণ দেওয়ার কোনই অধিকার নেই। কারণ তিনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হননি। যুক্তরাষ্ট্রের যেখানেই হাসিনা সেখানেই প্রতিরোধ আন্দোলন সর্বাত্মক ভাবেই সফল হবে বলে জানান বিএনপি নেতারা। তারা বলেন, দেশের সাধারন মানুষকে খুন গুম আর ভয়াবহ আতংকের মধ্যে রেখে বিশ্বব্যাংকে এসে উন্নয়নের কথা বলে বিশ্ববাসীর কাছে মিথ্যাচার করছে শেখ হাসিনা। বক্তারা বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার অনির্বাচিত ও অগণতান্ত্রিক সরকার। তারা দেশের বিরোধী দলের নেতাকর্মিদের উপর জেল-জুলুমসহ হত্যার রাজনীতি করছে। এ বিক্ষোভ সমাবেশে অবিলম্বে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানান নেতারা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওয়াশিংটন ডিসিতে আগমনের প্রতিবাদে পূর্বানুমতি বিএনপির নেতারা এ বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেন। বিক্ষোভ সমাবেশে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির অনেক নেতাকর্মিরাই দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্তির শপথে বলিয়ান হতে দলে দলে যোগ দেন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন
নিবাহী কমিটির সদস্য জিল্লুর রহমান জিল্লু, গিয়াস আহমেদ, মিজানুর রহমান মিল্টন ভূইয়া, যুক্তরাষ্ট্র সফররত বিএনপির নিবাহী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মারুফ হোসেন, দাউদকান্দি বিএনপির সভাপতি এম এ লতিফ ভূইয়া, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি-আনোয়ার হোসেন, আবদুস সবুর, জসিম ভূইয়া, সাবেক ছাত্রনেতা ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী পারভেজ সাজ্জাদ, ফারুক চৌধুরী, এবাদ চৌধুরী, মোশারফ হোসেন সবুজ, যুবদলের সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী, সাধারন সম্পাদক আবু সাঈদ আহমেদ, এটিএম রহমান, কাজী শাখাওয়াত হোসেন আজম, মাকসুদুল হক চৌধুরী, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ইলিয়াছ খান, ষ্টেট বিএনপির সভাপতি মাওলানা আতিকুল্লাহ, মোতাহার হোসেন, আকতার হোসেন বাদল, যুন্ম আহবায়ক নাসিম আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন, ফারুক হোসেন মজুমদার, গোলাম ফারুক শাহীন, নুর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর সরকার, সৈয়দা মাহমুদা শিরিন, অ্যাড. রেদোয়ানা রাজ্জাক, এস এ খোকন, বিএম বাদশা, মাজহারুল হক মিরন, এ আর মাহবুবুল হক, নুর আলম আমানত হোসেন, হযরত আলী, আহসান উল্লা মামুন, রাশেদ রহমান, কামাল পাশা মওদুদ, শাহবাজ আহামেদ, ফারদিন রনি, মোহামেদ জাহাঙ্গীর, তোফায়েল আহমেদ, মনির, জহির খান, নাজমুল হোসাইন, মনির হোসেন, সিদ্দিক পাটোয়ারী, জাহাঙ্গীর তরফদার, মোঃ আবু বকর, নুর হোসেন, মাঈনউদ্দিন ও মোঃ সেলিম। যুক্তরাষ্ট্র জাগপার সভাপতি রহমত উল্লাহ।
মেরিল্যান্ড বিএনপি নেতা মোহম্মদ কাজল, জাহাগীর কবির বাবলু, আলবাব হোসেন সোহাগ, তানভীর হাসান, সারওয়ার মিয়া, মাইনুল ইসলাম মিয়া, রুবেল মজুমদার, তাহের মজুমদার,হাসান চৌধুরী,মাহমুদ রায়হান,মামুন মোতালিব,সাইফ খান,আসিফ আলী,মীর মোফাজ্জল হোসেন,সালাউদ্দিন রাজু,কবির হোসেন,মো সাহাবুদ্দিন, মো রাসেল,ওহিদুর রহমান
মো ইয়াসিন ও খালেকুজজামান বাবুল চৌধুরী।
ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপি নেতা হাফিজ খান, ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন, জাহিদ খান, দেওয়ান বিপ্লব,আরিফ ইসলাম ও তুহিন ইসলাম। ভার্জিনিয়া বিএনপি নেতা জহির খান, নেসার আহমেদ, মোহাম্মদ তোফায়েল, জাহিদুল ইসলাম,মোহাম্মদ জামান, কামরুন কনা ও রাসেল বিশ্বাস।