মালিকের জন্য শ্রমিক নির্বাচন, নিয়োগ ও মজুরি প্রদানে ইসলামে রয়েছে সুস্পষ্ট বক্তব্য। মালিকের প্রধান ও অন্যতম কর্তব্য হচ্ছে কর্মক্ষম, সুদক্ষ, শক্তিমান এবং আমানতদার বিশ্বস্ত ব্যক্তিকে কাজে নিয়োগ দেওয়া। কর্মক্ষম ও আমানতদারীর অভাবে কোনো মালিক পক্ষই তার কল-কারখানায় সফলতা অর্জন করতে পারে না। আবার শ্রমিকের দায়িত্ব হচ্ছে যথাযথভাবে মালিকের কাজ করা। মালিক-শ্রমিকের এ দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে কোরআন ও সুন্নায় সুস্পষ্ট বক্তব্য রয়েছে। কী সেসব বক্তব্য?
মালিকের প্রথম দায়িত্ব: আল্লাহ তাআলা শ্রমিক সম্পর্কে মালিকদের সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। মালিকের জন্য প্রথম দায়িত্ব হলো আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী শ্রমিক নির্বাচন করা। আল্লাহ বলেন-
اِنَّ خَیۡرَ مَنِ اسۡتَاۡجَرۡتَ الۡقَوِیُّ الۡاَمِیۡنُ
‘তোমার মজুর (শ্রমিক) হিসেবে উত্তম হবে সেই ব্যক্তি, যে শক্তিশালী, বিশ্বস্ত।’ (সুরা কাসাস: আয়াত ২৬)
মালিকের দ্বিতীয় দায়িত্ব: মালিকের দ্বিতীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো- শ্রমিককে কাজে নিয়োগ দেওয়ার আগে অবশ্যই মালিককে শ্রমিকের কর্ম সময় ও মজুরি নির্ধারণ করে কাজে নিয়োগ দেওয়া। যদি এর ব্যতয় ঘটে তবে শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। ফলে কাজে বিঘ্ন ঘটে। মালিক ও শ্রমিক উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এ কারণে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে শ্রমিক নিয়োগ প্রসঙ্গে ঘোষণা করেছেন- ‘নিশ্চয় শ্রমিকের মজুরি নির্ধারণ না করে তাকে কাজে নিয়োগ করিও না।’ (মুসলিম)
মালিকের তৃতীয় দায়িত্ব: শ্রমিকের প্রতি মালিকের তৃতীয় দায়িত্ব হচ্ছে- শ্রমিককে কাজ দিয়ে তার থেকে তা যথাযথ বুঝে নেওয়া এবং শ্রমিকের যথাযথ মজুরিও সঙ্গে সঙ্গে পরিশোধ করা। শ্রমিকের পারিশ্রমিক দেওয়ার তাগিদ দিয়ে বিশ্বনবি বলেন-
‘শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকাবার আগেই তার পারিশ্রমিক দিয়ে দাও।’ (ইবনে মাজাহ)
মনে রাখতে হবে: মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে তখনই সুসর্ম্পক প্রকাশ পাবে, যখন শ্রমিক যথাযথভাবে মালিকের অর্পিত দায়িত্ব পালন করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা মালিকের কাছে হস্তান্তর করবে। আবার মালিকও শ্রমিকের কাছ থেকে কাজ বুঝে পেয়ে তার নির্ধারিত পাওনা তথা পারিশ্রমিক যথাযথভাবে বুঝিয়ে দেবে আর তখনই তাদের মাঝে দেখা দেবে শান্তি।
আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার সব মালিক ও শ্রমিককে প্রত্যেকের জন্য নির্ধারিত যথাযথ দায়িত্ব পালন করে শান্তি ও নিরাপদ সমাজ বিনির্মাণের তাওফিক দান করুন। আমিন।