পৃথিবীতে এখনও এমন কিছু অদ্ভুত উপজাতি রয়েছে, যারা নিজেদের নগরায়ণ ও আধুনিকতা থেকে দূরে রেখেছে। এক অর্থে তারা পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। আধুনিক মানুষ কীভাবে জীবনযাপন করে সেই বিষয়ে এদের কোনও ধারণাই নেই। আজ ৫ এমন উপজাতি সম্পর্কে আলোচনা করব আমরা, যারা বিশ্বের সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন উপজাতির মধ্যে অন্যতম।
সেন্টিনেলিজ উপজাতি- সেন্টিনেলিজ উপজাতির মানুষদের বসবাস আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের উত্তরে সেন্টিনেল দ্বীপে। ভারত সরকার এই দ্বীপে পর্যটক বা অন্য মানুষদের যাতায়ত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে। এই উপজাতিটিকে নগর-সমাজ থেকে সবচেয়ে নির্জন ও বিচ্ছিন্ন উপজাতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এমনটা অনুমান করা হয় যে তাদের মোট জনসংখ্যা ৫০ থেকে ২০০। এরা সাধারণত অচেনা মানুষ দেখলেই হামলা চালায়। গত ২০১৮ সালে এমনই এক হামলার ঘটনা সামনে এসেছিল। ওই হামলায় এক বিদেশি পর্যটক প্রাণও হারান। এই উপজাতির মানুষদের মূল পেশা শিকার। আশ্চর্যজনক ভাবে এদের ভাষাও সম্পূর্ণ আলাদা।
ইয়াইফো এবং অন্যান্য উপজাতি- পাপুয়া নিউ গিনিতে এমন ৪০টিরও বেশি উপজাতি রয়েছে যাদের সঙ্গে সভ্য সমাজের খুব বেশি যোগাযোগ নেই। পূর্বে ইয়াইফো উপজাতিও এমন এক উপজাতি ছিল। পরে অবশ্য তাদের সনাক্ত করা হয়। এছাড়াও ১৯৭০ সালে কোরওয়াই উপজাতিও প্রথমবারের মতো নগরসমাজের চোখে পড়ে। তবে বর্তমানে অনেক পর্যটকরা প্রায়ই অনুমতি ছাড়া এই দ্বীপে ভ্রমণ করেন। এর ফলে এই উপজাতিটি নিজেদের স্বাতন্ত্র্য খুইয়ে ফেলতে চলেছে।
মক্সিহাতেতেমা- ব্রাজিল এবং ভেনিজুয়েলার মধ্যবর্তী রিজার্ভ ফরেস্টের বাসিন্দা মোক্সিহাতেতেমা। এই অঞ্চলটিকে ইয়ানোমামি রিজার্ভও বলা হয়। এই উপজাতির মানুষরা বাইরের পৃথিবী থেকে নিজেদের সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। এদের মোট জনসংখ্যা মাত্র ১০০। তবে ২০১৬ সালে আকাশযান থেকে তোলা কিছু ছবির সাহায্যে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন এদের জনসংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে, তবে তারা বাইরের সমাজ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। অবৈধ সোনার খনিতে অবস্থিত এই উপজাতির মানুষদের বসতির ওপর ক্রমশই আশঙ্কার মেঘ ঘনিয়ে আসছে।
মাশকো পিরো- পেরুর সীমান্তবর্তী আমাজনের ঘন বন এমন অনেক উপজাতির আবাসস্থল যারা সভ্য ও নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা থেকে এখনও বহুদূরে বাস করে। এমনই এক উপজাতি হল মাশকো-পিরো। এরা বছরের পর বছর বিচ্ছিন্ন ভাবে বসবাস করছে। এদের জনসংখ্যা বর্তমানে প্রায় ৬০০ থেকে ৮০০।
আয়োরিও- প্যারাগুয়েতে বসবাসকারী এই উপজাতিটি আমাজন বেসিনের বাইরে বসবাসকারী সর্বশেষ উপজাতি হিসাবে বিবেচিত হয় যাদের সঙ্গে বাইরের জগতের কোনও যোগাযোগ নেই ৷