সুনামগঞ্জে ধর্ষনের পর প্রবাসীর স্ত্রীকে ৬ টুকরো করে নির্মম ভাবে হত্যাকান্ডের রেস কাটতে না কাটতেই চোর সন্দেহে উজির মিয়া (৩৫) নামের এক যুবককে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এঘটনার বিচারের দাবীতে এলাকাবাসীর দিনভর সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধনে দেখা দিয়ে উত্তেজনা। আর সঠিক বিচার না পাওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ভোক্তাভোগীরা।
জানা গেছে- গতকাল সোমবার (২১ শে ফেব্রুয়ারী) দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মৃত উজির মিয়ার লাশ নিয়ে সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাগলা এলাকায় সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। এঘটনার সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি দিয়ে মৃত উজির মিয়ার লাশকে চাপা দেয়া হয়। এঘটনার পর উত্তেজনা আরো বেড়ে যায়। এর আগে সকাল অনুমান ৯টায় স্থানীয় কৈতক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত উজির মিয়ার মৃত্যু হয়। সে জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের বাঘেরকোনা গ্রামের বাসিন্দা।
এব্যাপারে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী জানান, সম্প্রতি জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশা এলাকায় গরু চুরির ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ৯ ফেব্রুয়ারী (মঙ্গলবার) রাতে চোর সন্দেহে পাশর্^বর্তী পাগলা ইউনিয়নের শক্রমর্দন এলাকা থেকে উজির মিয়াকে গ্রেফতার করে শান্তিগঞ্জ থানায় নিয়ে রেধরক মারধর করে পুলিশ। পরদিন (১০ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে আদালতে হাজির করা হলে ওই যুবকের জামিন মঞ্জুর করে আদালত। পরে তাকে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শারীরিক অবনতি দেখে রাতেই তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসার পর আহত উজির মিয়া আবারও অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাৎক্ষনিক ভাবে স্থানীয় কৈতক হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সোমবার (২১শে ফেব্রুয়ারী) সকালে মৃত্যু হয়।
এব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও মৃত যুবকের স্বজন ইমরান হোসেন, আনোয়ার মিয়া বলেন- উজির মিয়া একজন নামাজি মানুষ ছিলেন। বিনা অপরাধে পুলিশ ধরে নিয়ে নির্যাতন করার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তার প্রতিবাদে আমরা যখন সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ করছিলাম তখন উপজেলা প্রশাসনের গাড়ি মৃত উজির মিয়ার লাশকে চাপা দিয়ে চলে যায়। এমন জগন্য ঘটনা আমরা আর কোনদিন দেখিনি। তাই এই অন্যায়ের সঠিক বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন চলবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবু সাইদ বলেন- আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে এঘটনার সাথে পুলিশের কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার উল হালিম সাংবাদিকদের বলেন- এঘটনার সাথে যে বা যারাই জড়িত থাকুক, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসন কারো দায় নেবেনা। আমরা এলাকাবাসীকে শান্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছি।