২০১৯ সালের শেষভাগে চিনে দেখা দিয়েছিল নতুন এক সংক্রমণের (COVID-19)। সাধারণ জ্বর, সর্দিকাশির উপসর্গ রাতারাতি প্রাণ কাড়তে শুরু করে। ২০২০ সালের গোড়াতেই আশেপাশের বিভিন্ন দেশেও ছড়িয়ে পড়ে এই মারণ সংক্রমণ। মার্চ মাসের মধ্যে করোনা সংক্রমণের (COVID-19) কারণে থমকে যায় গোটা বিশ্ব।
তিন বছর কেটে গেলেও সেই সংক্রমণ থেকে মুক্তি মেলেনি। বর্তমানে ফের একবার ঊর্ধ্বমুখী ভারত সহ একাধিক দেশের করোনা সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে আরও ভয়ের কথা শোনালেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। একটি বিখ্যাত হেলথ অ্যানালিটিক্স ফার্মের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী এক দশকের মধ্যে করোনার মতো ভয়ঙ্কর মহামারি বা প্যান্ডেমিক (Pandemic) হওয়া ২৭.৫ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে। আরও ঘন ঘন নতুন ভাইরাস তৈরি হবে বলেই জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তবে নতুন ভাইরাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই ক্রমাগত নতুন নতুন ভ্য়াকসিন তৈরি হওয়ায় মৃত্যুহার (Death Rate) তুলনামূলকভাবে কম হবে বলেই জানিয়েছেন তারা।
লন্ডনের এয়ারফিনিটি লিমিটেডের তথ্য অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তন, আন্তর্জাতিক ভ্রমণের হার বৃদ্ধি, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও জুনোটিক রোগের কারণে প্রাণঘাতী সংক্রমণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। তবে প্রাণঘাতী ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লেও, যদি নতুন প্যাথোজেন আবিষ্কারের ১০০ দিনের মধ্যে কার্যকরী ভ্যাকসিন উত্পাদন করা সম্ভব হয়, তবে ভয়ঙ্কর প্যান্ডেমিক ছড়িয়ে পড়ার হার ৮.১ শতাংশে কমে দাঁড়াতে পারে।
এয়ারফিনিটি সংস্থার দাবি, আগামী এক দশকের মধ্য়ে যদি করোনার মতোই প্রাণঘাতী কোনও নতুন সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে, তবে তা বার্ড ফ্লুয়ের মতো কোনও সংক্রমণ হতে পারে। পশুদেহ থেকে মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ার পর তা যদি এক মানবদেহ থেকে অপর দেহে ছড়িয়ে পড়ে, তবে এই ধরনের সংক্রমণে ব্রিটেনে দৈনিক ১৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বিগত দুই দশকে করোনা ভাইরাসের তিনটি রূপ সার্স, মার্স ও কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া ২০০৯ সালে সোয়াইন ফ্লু সংক্রমণও প্যান্ডেমিকের রূপ নিয়েছিল। বর্তমানে করোনার পাশাপাশি এইচ৫এন১ বার্ড ফ্লু-র স্ট্রেইনও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। এখনও অবধি খুব অল্প সংখ্যক মানুষই এই সংক্রমণে আক্রান্ত হলেও ভাইরাসের রূপান্তর বা মিউটেশন নিয়েই চিন্তিত গবেষকরা। এই চিন্তা বাড়ার আরও একটি কারণ হল বেশ কিছু প্য়াথোজেন যা অত্যন্ত সংক্রামক, তার কোনও চিকিত্সা বা ভ্যাকসিন এখনও তৈরি হয়নি। এরমধ্য়ে অন্য়তম হল মার্স ও জ়িকা ভাইরাস।