আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে থাকে, সব ধর্মীয় বিশ্বাসের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করে। আওয়ামী লীগ সরকার বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নেতারা সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
সরকারি বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, বৈঠকে ঐক্য পরিষদের নেতারা বলেছেন, দেশে চাকরি, নিয়োগ, পদোন্নতির মতো সব ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর হয়েছে। বিভিন্ন ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করতে পারায় তারা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানায়।
এদিকে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ঐক্য পরিষদের পক্ষে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বিগত ১৪ বছরে দেশের যে প্রভূত উন্নয়ন ঘটেছে তার প্রশংসা করার পাশাপাশি ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বিরাজমান সমস্যাসমূহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘এ সবই আপনার জানা, তার পরও আপনার সদয় দৃষ্টিতে আনছি, কারণ এর সমাধান আপনারই হাতে।’
বৈঠকে রানা দাশগুপ্ত আরো বলেন, মননে ও মানসিকতায় সমাজ ক্রমশ পিছিয়ে যাওয়ার কারণে দেশ আজও সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মীয় বৈষম্যমুক্ত হতে পারেনি। মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মঠ-মন্দির-গির্জা বিভিন্ন সময় সাম্প্রদায়িক অপশক্তির হামলার শিকার হচ্ছে। জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণ চলছে। এর পেছনে সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশকে সংখ্যালঘু শূন্য করা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনসংখ্যার মধ্যে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর হার ৯৮.৬ শতাংশ থেকে বর্তমানে আনুমানিক ৪৮ শতাংশে নেমে এসেছে। ৭৫-এর আগেকার মতো জাতীয় সংসদের অধিবেশনের শুরুতে দেশের সব সম্প্রদায়ের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ পুনরায় প্রচলন করার জন্য পরিষদ প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করে।
পরিষদের পক্ষে দাশগুপ্ত তাঁর বক্তব্যে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা কামনা করেন। জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন ও সংখ্যালঘু বিশেষ সুরক্ষা আইন প্রণয়ন বাংলাদেশের বিদ্যমান বাস্তবতায় জরুরি বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ ছাড়া সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন এবং অনগ্রসর ও অনুন্নত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, দলিত ও চা-বাগান শ্রমিকদের শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে বিশেষ কোটা ও সুযোগ সুবিধা অব্যাহত থাকলেও তা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশনা কামনা করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অত্যন্ত হৃদ্যতা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিদলে আরো ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, নিমচন্দ্র ভৌমিক, নির্মল রোজারিও, কাজল দেবনাথ, ভদন্ত সুনন্দপ্রিয়, জে এল ভৌমিক, মিলন কান্তি দত্ত ও মনীন্দ্র কুমার নাথ। আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটার্জিও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।