তীব্র গরমে রোজ খান পান্তা ভাত। এই পান্তা ভাত শরীর ঠান্ডা রাখার পাশাপাশি করবে শরীরের একগুচ্ছ উপকার। পান্তা ভাত খেলে শরীরের শক্তি বাড়ে। অসুখ-বিসুখ নাকি সহজেই কাবু করতে পারে না। তাছাড়া খরচও কম আর খেতেও বেশ সুস্বাদু। পান্তা ভাতের নাম শুনলে কেউ কেউ হাসতে পারেন কেউ আবার নাক সিঁটকোতে পারেন।
মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ফলের মতো পুষ্টিকর খাবার ফেলে পান্তা ভাত খেয়ে কারও গায়ের জোর হতে পারে এটা ভাবাই যায় না।
এই পান্তাভাতের প্রশংসাতেই পঞ্চমুখ চিকিত্সকেরাও। গবেষণা বলছে যে আগের দিন রেঁধে রাখা ভাত জল দিয়ে রেখে দিলে নাকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দারুণ কার্যকর। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, বাংলাদেশ এবং ওডিশাতেও এই ভাত খাওয়ার যথেষ্ট প্রচলন রয়েছে। ওডিশার ঐতিহ্যবাহী খাবার, উড়িয়া ভাষায় এর নাম পোখাল ভাত। ভাত সারা রাত জলে ভিজিয়ে রেখে দিলেই তা খানিকটা ফুলে ওঠে। সঙ্গে যদি গন্ধরাজ লেবু, কাঁচা তেল, নুন, কাঁচালঙ্কা, কাঁচা পেয়াজ এবং সুস্বাদু ভাজা থাকে তাহলে এই ভাত খাওয়ার আনন্দই আলাদা।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সাল থেকে পান্তাভাতের পুষ্টিগুণ নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। তাতে জানা যায় যে, জলে ফেঁপে ওঠা পান্তাভাতের শর্ট-চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়াও পান্তা ভাতে থাকে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট। ফ্যাটি অ্যাসিড এবং কার্বোহাইড্রেটের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি ধর্ম শরীরের এনার্জি লেভেল বৃদ্ধি করে। পান্তা ভাত সারারাত ফার্মেন্টেশনের ফলে ভিটামিন বি টুয়েলভের মাত্রা বেড়ে যায়। যার ফলে ক্লান্তি দূর করে অনিদ্রার সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
ফারমেন্টেশনের কারণে পান্তায় কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাটের পরিমাণ অনেকটাই কমে যায়। তাই অনেক ক্ষেত্রে ওয়েট লসে কার্যকরী হয়।তবে অবশ্যই সেটা সীমিত পরিমাণে খেতে হবে। অন্যদিকে পান্তা ভাতকে বিউটি সিক্রেট অফ এশিয়া বলা হয়। কারণ এটি কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের ইলাস্টিসিটি বৃদ্ধি করে। ফলে ত্বক মসৃণ, টানটান ও উজ্জ্বল দেখায়।
পান্তা ভাতেক বলা হয় বডি রিহাইড্রেটিং ফুড। গরমকালের খাবার হিসেবে পান্তার জুরি মেলা ভার। বিশেষজ্ঞরা বলেন, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টে থাকায়শরীরের প্রয়োজনীয় উপকারী উপাদানের ঘাটতি মিটতে সময় লাগে না। ১০০ গ্রাম সাধারণ ভাতে ৩.৪ mg আয়রন থাকে। অন্যদিকে পান্তা ভাতের ক্ষেত্রে আয়রন থাকে প্রায় ৭৩.৯১ mg অর্থাত্ প্রায় ২১ গুণ বেশি।