রমজান মুমিনের প্রশিক্ষণের মাস


ধর্ম ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 12-04-2023

রমজান মুমিনের প্রশিক্ষণের মাস

রমজান মাস তাকওয়া অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। রোজার মাধ্যমে রোজাদার এই প্রশিক্ষণ পায়। যুগে যুগে এ রোজা ছিল আল্লাহর দেওয়া বিধান। এখনও আছে আর তা ভবিষ্যতেও থাকবে। রোজার প্রশিক্ষণে মানুষ তাকওয়ার অর্জন করে। বছরজুড়ে এ তাকওয়ায় পরিচালিত হয় মুমিন মুসলমান। রোজা মানুষকে এ শিক্ষা দেয় যে, যুগে যুগে সব মনীষী যে হুকুম বা বিধান পালন করেছে, সে হুকুমই সে পালন করছে। এ উপলব্দি তাকে আল্লাহওয়ালা কাফেলার অন্তর্ভূক্ত হওয়ার সুযোগ করে  দেয়।

চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে রোজার বিধান মেনে চলা শুরু হয়। যা শাবান মাসের শেষ সন্ধ্যায় শুরু হয়। লোকেরা শাবানের শেষ তারিখ গণনা করা শুরু করে। যাতে তারা সেদিন চাঁদ দেখতে পায়। রমজানের আগমনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। চাঁদ দেখে রোজা রাখা এমন, যেন রোজা রাখার আগে একজন ব্যক্তির মধ্যে রোজার মনোভাব জাগ্রত করা।

রমজানের রোজা পালনের প্রতিটি মুহূর্তই আমলের। বিশেষ ধর্মীয় আমলের সময় এটি। এ সময়টি শুরু হয় শাবানের সন্ধ্যায়। তাদের চেতনা এটা জানার জন্য জাগ্রত হয়, চাঁদ পৃথিবীর আবর্তনের সেই পর্যায়ে প্রবেশ করেছে কি-না, যখন থেকে অবশ্যই তাদের জীবনের গতিপথটি সম্পূর্ণ পরিবর্তন করতে হবে।

রোজার আগে যখন তার খিদে পেত, তখন সে খাবার খেত; পিপাসার সময় পানি পান করত। যেন বাকি দিনগুলোতে ক্ষুধা ও আকাঙ্ক্ষা তাদের গাইড ছিল; তবে এখন অনুশাসন তাদের জীবনের গাইড হয়ে গেছে। এখন তাদের খুব ভালোভাবে জানতে হবে, রাতে কয়টা বেজে কত মিনিট পর্যন্ত খাওয়া উচিত। এরপর পুরোপুরি খাওয়া এবং পান করা বন্ধ করতে হবে। তারপর সন্ধ্যায় সঠিক সময়ে আবার খাওয়া-দাওয়া শুরু করতে হবে।

রোজাদার শান্তির প্রতীক। যখন সত্যিকারের রোজাদারকে মন্দ কিছু বলা হয়, তখন সে তার প্রতিক্রিয়া জানায় না। বরং বলে, ‘আপনার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। আপনি আমাকে খারাপ বলেছিলেন বলে আমি আপনার প্রতি খারাপ ব্যবহার করব না। কারণ, আমি রোজাদার।’

যে দিনগুলি কোনো সতর্কতা বা ভয় ছাড়াই কেটে যেত, এখন রমজানের রোজা পালন করার ফলে তাদেরকে এ জীবনবোধের সঙ্গে দিনগুলো এভাবে কাটাতে হয় যে, তাদের কি করা উচিত এবং কি না করা উচিত, কখন খাবেন এবং কখন খাবেন না, এটি করবেন না, না হলে রোজা ভেঙে যাবে, এটি করবেন না, অন্যথায় আপনি রোজার পরেও রোজা রাখবেন।

রমজানের রোজা মুমিন মুসলমানের প্রশিক্ষণের মাস। রোজা একজন ব্যক্তির জন্য একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হওয়া। রোজার দিনগুলোতে একজন ব্যক্তি তার সব সময় প্রশিক্ষণে ব্যয় করেন এবং জানতে চান, একজন মানুষের সীমারেখা; সে কতদূর যেতে পারে এবং কোথায় যেতে পারে না, কীভাবে থাকা উচিৎ হবে এবং কীভাবে থাকা উচিৎ নয়।

রোজার উদ্দেশ্য হলো, একজন ব্যক্তির প্রতিদিনের রুটিনে ‘আপনি কি করতে পারবেন এবং কি করতে পারবেন না’-এর বিষয়টি উত্থাপন করে তার স্থায়ী মানসিকতা তৈরি করা। এটি নীতিগত জীবনের প্রশিক্ষণ। আর এ ধরনের নীতিগত জীবন প্রতিটি মুমিনের জন্য সারা জীবনেই প্রয়োজন।

আল্লাহ তাআলা রোজাদার বান্দাকে রমজানের রোজা পালন করার পাশাপাশি সার্বিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]