রমজানে মুমিনের পাঁচ আমল


ধর্ম ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 11-04-2023

রমজানে মুমিনের পাঁচ আমল

মুসলমানদের মৌলিক ইবাদত ও আমলগুলো রাসুল (সা.) থেকে দেখে দেখে শিখেছেন সাহাবিরা। মুসলমানদের জন্য সাহাবারা হলেন দ্বিন ও আমলের মাপকাঠি। অনুসরণের ক্ষেত্রে তারা হলেন উত্তম আদর্শ। অন্যান্য মাসের তুলনায় বরকতময় রমজান মাসে সাহাবিদের আমলি তৎপরতা ছিল ব্যতিক্রম। তাই তাদের রমজানের আমল সম্পর্কে আমাদের জানা উচিত। নিম্নে তাদের কয়েকটি আমল তুলে ধরা হলো—

রাত জেগে তারাবি ও তাহাজ্জুদ আদায় : সাহাবায়ে কেরাম (রা.) রমজানের তারাবিহ ও তাহাজ্জুদের ব্যাপারে খুবই উদ্যমী ছিলেন। পুরো রাত জেগে তারা তারাবি ও তাহাজ্জুদ পড়তেন এবং এক বা একাধিক কোরআন খতম করতেন। কোনো কোনো সাহাবি তো সাহরির সময় পর্যন্ত নামাজকে দীর্ঘ করতেন। বর্ণিত আছে, ইবনে উমর (রা.) তারাবির নামাজ জামাতে পড়ানোর জন্য উবাই ইবনে কাব ও তামিমে দারিকে নিয়োগ  করতেন। তখন তারা নামাজে এক শ আয়াতবিশিষ্ট সুরাগুলো পাঠ করতেন। লম্বা কেরাত পাঠ করার কারণে তারা লাঠির ওপর ভর করতেন। আর সাহরির আগে তারা নামাজ শেষ করতেন না। (লাতায়েফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা ৩৯৫)

অন্য বর্ণনায় এসেছে, ইবনে উমর (রা.) সবার সঙ্গে মসজিদে তারাবি পড়তেন। নামাজ শেষ করে সবাই যখন বাড়িতে চলে যেত, তখন নতুনভাবে অজু করে তিনি মসজিদে ফিরে এসে সাহরি পর্যন্ত নামাজ পড়তেন। (আস সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকি, বর্ণনা : ৪২৮০)

তাবেঈন উসমান নাহদি (রহ.) বলেন, উমর (রা.) (রমজানের শুরুতে) তিন কারিকে ডাকলেন। তারপর তাদের কেরাত শুনলেন। দ্রুত তিলাওয়াতকারীকে আদেশ করলেন,রমজানে (তারাবির মাঝে) লোকদের (প্রতি রাকাতে) ৩০ আয়াত করে পড়ার, মধ্যম ধরনের তিলাওয়াতকারীকে ২৫ আয়াত এবং ধীরে তিলাওয়াতকারী ২০ আয়াত পড়ার নির্দেশ দিলেন। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭৭৩২)

কোরআন তিলাওয়াতে প্রতিযোগিতা : সাহাবায়ে কেরাম (রা.) সারা বছরই যথেষ্ট আগ্রহ নিয়ে কোরআন মাজিদ তিলাওয়াত করতেন। তবে রমজান এলে তিলাওয়াতের প্রতি তাঁদের আগ্রহ  ও গুরুত্ব আরো বেড়ে যেত। বর্ণিত আছে, উসমান (রা.) রমজানের প্রত্যেক রাতে, ইবনে মাসউদ (রা.) তিন রাতে, তামিমে দারি (রা.) সাত রাতে আর উবাই ইবনে কাআব (রা.) আট রাতে পুরো কোরআনুল করিম তিলাওয়াত করতেন। (আস সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকি, বর্ণনা : ৪০৫৯)

আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে দানশীলতা : সাহাবায়ে কেরাম দুনিয়ার আয়-উপার্জনে উন্নতি করা থেকে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিতেন। তাই তো রমজানে তাঁদের দানশীলতা ও বদান্যতা বেড়ে যেত। কেননা রমজানে বান্দার সঙ্গে আল্লাহর সম্পর্ক গভীর হয়। ইবনে উমর (রা.) সম্পর্কে বর্ণিত আছে, তিনি রমজান মাসে অসহায় ব্যক্তিদের সঙ্গে না নিয়ে ইফতার করতেন না। (লাতায়েফুল মাআরিফ : ১/৬৮)

বেশি পরিমাণে দোয়া করা : রমজানে রোজাদারদের দোয়া কখনো বিফলে যায় না। এ জন্য সাহাবায়ে কেরাম অধিক পরিমাণে দোয়া করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ইফতারের সময় রোজাদারের অবশ্যই একটি দোয়া আছে, যা রদ হয় না (কবুল হয়)। ইবনে আবু মুলাইকা (রা.) বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)-কে ইফতারের সময় বলতে শুনেছি, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার দয়া ও অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি, যা সব কিছুর ওপর পরিব্যাপ্ত, যেন আপনি আমাকে ক্ষমা করেন’। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৭৫৩)


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]