হিজাব না পরার অপরাধে ২১ বছরের তরুণী মাহশা আমিনিকে হেফাজতে নিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল ইরানের নীতি পুলিশের বিরুদ্ধে। তারপরেই সেদেশের হাজার হাজার সাধারণ মানুষ প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন। হিজাব পুড়িয়ে, নগ্ন হয়ে, চুল কেটে বিক্ষোভ, পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ, অজস্র প্রতিবাদীর মৃত্যু-এসবের এখনও বছর ঘোরেনি। তার মধ্যেই হিজাব পরার বাধ্যবাধকতা নিয়ে আরও কঠোর ইরান সরকার। হিজাব-হীন বেপর্দা নারীদের চিহ্নিত করতে এবার পথেঘাটে স্মার্ট ক্যামেরা বসিয়ে নজরদারি চালানো হবে বলে জানিয়েছে সেদেশের পুলিশ।
শনিবার ইরান পুলিশের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, হিজাব আইন ভঙ্গ করবেন যাঁরা, তাঁদের চিহ্নিত করার জন্য স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। প্রকাশ্য জায়গায় লাগানো হবে স্মার্ট ক্যামেরা ও অন্যান্য টুলস। সেসবের সাহায্যে সহজেই শনাক্ত করা যাবে ইসলামিক পোশাকবিধি ভঙ্গকারীদের।
প্রাথমিকভাবে প্রমাণ সহ মেসেজ পাঠিয়ে পুলিশের তরফ থেকে সতর্ক করা হবে আইন অমান্যকারীদের। একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে তার পরিণাম কী হতে পারে, সেই বিষয়ে সাবধান করা হবে তাঁদের।
ইরান পুলিশের প্রধান আহমেদ রেজা রাদান একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, আগামী শনিবার থেকেই এই স্মার্ট নজরদারি ব্যবস্থা কার্যকর হবে। প্রকাশ্য স্থানে হিজাব ছাড়া বের হবেন যাঁরা, তাঁদের প্রথমে সতর্ক করা হবে, এবং পরবর্তীতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাদান আরও জানিয়েছেন, পোশাকবিধি ভঙ্গ করেছেন, এমন কোনও যাত্রীকে গাড়িতে তুললে সতর্ক করে মেসেজ পাঠানো হবে গাড়ির মালিককেও। অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হবে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মাহশা আমিনির মৃত্যুর পর বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল ইরান। তারপর থেকেই হিজাব ছাড়াই রাস্তায় বেরোনো মহিলার সংখ্যা রাতারাতি বৃদ্ধি পেয়েছিল। শনিবার ইরান পুলিশের তরফে একটি পৃথক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ইসলামিক আইনের পরিপন্থী কোনও ব্যক্তিগত কিংবা সমবেত আচরণ একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না।