পবিত্র রমজানের যে সময়ে আল্লাহ দোয়া কবুল করেন


ধর্ম ডেস্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 10-04-2023

পবিত্র রমজানের যে সময়ে আল্লাহ দোয়া কবুল করেন

পবিত্র রমজান মাসে আল্লাহর দয়ার দুয়ার খুলে যায়। মহান আল্লাহ বান্দার প্রতি হয় দয়াশীল। রমজানে এ দয়ার পরিমাণ আরও বেশি বৃদ্ধি পায়। তিনি প্রতিটি আমলের প্রতিদান বৃদ্ধি করে দেন। বান্দার দোয়া কবুল করেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন।

বিশেষত রমজানের এসব কল্যাণ লাভে বিশেষ তিনটি সময়ের কথা হাদিসে বর্ণিত আছে। যখন বান্দার প্রতি আল্লাহর করুণার ধারা বর্ষিত হয়। অথচ না জেনেই অনেকে সময়গুলো অবহেলায় কাটিয়ে দিয়ে থাকেন।

১. ফজরের পর : রমজান মাসে ফজরের পর বেশির ভাগ মানুষ ঘুমিয়ে থাকে। অথচ ইবাদত-বন্দেগি ও দোয়ার জন্য সময়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করে, তারপর সূর্য ওঠা পর্যন্ত বসে বসে আল্লাহর জিকির করে; এরপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করে তার জন্য একটি হজ ও একটি ওমরাহর সওয়াব রয়েছে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৫৮৬)

ইমাম নববী (রহ.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই দিনে আল্লাহকে স্মরণ করার সবচেয়ে উত্তম সময় ফজরের পর।’ (আল আজকার, পৃষ্ঠা ১৫৫)

বিজ্ঞ আলেমরা বলেন, ফজরের পর আল্লাহ জীবিকা বণ্টন করেন। তাই এ সময় ঘুমানো অপছন্দনীয়। বিশেষত রমজান মাসে যখন আল্লাহ তার অনুগ্রহের দুয়ার উন্মুক্ত করে দেন এবং প্রতিটি নেক কাজের প্রতিদান বৃদ্ধি করেন।

২. ইফতারের আগ মুহূর্ত : ইবাদত ও দোয়া কবুলের বিবেচনায় সূর্যাস্ত তথা ইফতারের পূর্ব মুহূর্ত খুবই মূল্যবান। পূর্বসূরি আলেমরা ইফতারের আগের সময়টুকু দোয়া ও আল্লাহর জিকিরে মগ্ন থাকতেন। কেননা মহানবী (সা.) বলেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না : ন্যায়পরায়ণ শাসক, রোজাদার যখন সে ইফতার করে এবং অত্যাচারিত ব্যক্তির দোয়া।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৭৫২) 

 কিন্তু আমাদের সমাজের বেশির ভাগ মানুষ এ সময় ইফতার প্রস্তুত করার কাজে ব্যস্ত থাকে। বিশেষত নারীরা আজানের আগমুহূর্ত পর্যন্ত কাজে ব্যস্ত থাকেন।

 ৩. রাতের শেষ তৃতীয়াংশ : আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য শেষ রাতের ইবাদত-বন্দেগি, দোয়া ও প্রার্থনার কোনো বিকল্প নেই। পবিত্র কোরআনে এ সময়ের দোয়া ও প্রার্থনার প্রশংসা করে বলা হয়েছে, ‘তারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, অনুগত, ব্যয়কারী এবং শেষ রাতে ক্ষমা প্রার্থনাকারী।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৭)

 নবী (সা.) বলেন, ‘রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকতে আমাদের প্রতিপালক পৃথিবীর আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেব, কে আমার কাছে চাইবে, আমি তাকে দান করব, কে আমার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করবে আমি তাকে ক্ষমা করব।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১৪৫)

তাই রোজাদারের উচিত, সাহরির আগে বা পরে তাহাজ্জুদ আদায়ে সচেষ্ট হওয়া এবং এ সময় আল্লাহর দরবারে ক্ষমা ও কল্যাণ প্রার্থনা করা।

শুধু এই তিন সময় নয়, বরং মুমিন তার জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত আল্লাহর ইবাদত ও জিকিরে সজীব করে তোলে। আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং তারা যা বলে, সে বিষয়ে আপনি ধৈর্য ধারণ করুন এবং সূর্যোদয়ের আগে ও সূর্যাস্তের আগে তোমার প্রতিপালকের প্রশংসা পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন; রাতে পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন এবং দিনের প্রান্তগুলোতেও, যাতে আপনি সন্তুষ্ট হতে পারেন।’ (সুরা ত্বহা, আয়াত : ১৩০)

আল্লাহ জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে তার স্মরণে সজীব করুন। আমিন।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]