ভারতে বাংলাদেশিদের হাতে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়া বাংলাদেশি তরুণীকে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের একটি রাজ্য আদালত। ২০২১ সালের মে মাসে ভারতের কর্নাটক রাজ্যের ব্যাঙ্গালুরুতে একদল যুবকের হাতে যৌন নির্যাতন ও গণধর্ষণের শিকার হন এক বাংলাদেশি তরুণী। নির্যাতনের শিকার ওই তরুণীকে এবার সর্বোচ্চ সাত লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ব্যাঙ্গালুরুর একটি দায়রা আদালত।
আদালত পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, ওই তরুণী আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের খপ্পরে পড়েছিলেন। যখন তাকে পাচার করা হয় তখনও প্রাপ্তবয়স্ক হননি তিনি। এই অপরাধের তীব্রতা এবং আদালতের পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, নির্যাতনের শিকার তরুণী জাতীয় আইন সহায়তা কর্তৃপক্ষের (নালসা) ক্ষতিপূরণ স্কিমের আওতায় সাত লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য। তাই ভারতের নির্ভয়া ফান্ড থেকে তাৎক্ষণিকভাবে ওই তরুণীকে ক্ষতিপূরণের অর্থ বুঝিয়ে দিতে বিভাগীয় আইন সহায়তা কেন্দ্রকে নির্দেশ দেন আদালত।
এদিকে বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন ২০২২ সালের মে মাসে অপর এক বাংলাদেশি নারীর সঙ্গে নির্যাতিত তরুণীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায় ভারত। বর্তমানে বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে পরিবারের সঙ্গে আছেন ওই তরুণী। তাই তরুণীকে ভিডিওকলের মাধ্যমে হাজির করে ই-পেমেন্টের মাধ্যমে অর্থ বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে আদালতের তরফে। জানা গেছে, তালাস অ্যাসোসিয়েশন নামের একটি মানবাধিকার সংস্থা এই অর্থ ওই তরুণীর কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
২০২১ সালের মে মাসে ভারতের কর্নাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে ভারতে টিকটক রিদয় নামের এক বাংলাদেশি ও তার তিন নারী বন্ধুসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ওই বাংলাদেশি তরুণীকে যৌন নির্যাতন ও দলবদ্ধ ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগ ওঠে। তরুণীর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে ভারতীয় পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। পুলিশের অভিযানে উদ্ধার করা হয় নির্যাতনের শিকার তরুণীকে। গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্তদের।
গেল বছরের শেষের দিকে বাংলাদেশি তরুণীকে ধর্ষণের এই ঘটনায় অভিযুক্ত ১২ জনের মধ্যে ১১ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে বেঙ্গালুরুর বিশেষ আদালত। এদের মধ্যে সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, একজনকে ২০ বছর ও আরেকজনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অভিযুক্ত অন্য দুজনকে ফরেনার্স অ্যাক্টের অধীন ৯ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। যে একজন খালাস পান তিনি ছিলেন মামলার রাজসাক্ষী। অভিযুক্ত ১২ জনের প্রত্যেকেই ছিলেন বাংলাদেশি যাদের মধ্যে তিনজন ছিলেন নারী।