জনশক্তি পাঠানোর নতুন ক্ষেত্র খুঁজতে হবে : প্রধানমন্ত্রী


অনলাইন ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 03-04-2023

জনশক্তি পাঠানোর নতুন ক্ষেত্র খুঁজতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের নতুন কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র এবং নতুন দেশ (জনশক্তি পাঠানোর জন্য) খুঁজে বের করতে হবে। আমরা এমন ধরনের প্রশিক্ষণের (কর্মীদের জন্য) ব্যবস্থা করব, যা একটি দেশের প্রয়োজন।

গতকাল গণভবনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দূতাবাসগুলোতে নির্দেশনা দেওয়া আছে, এখনকার কূটনীতি শুধু রাজনৈতিক নয়, এটা এখন অর্থনৈতিক কূটনীতির স্তরে নিতে হবে। প্রবাসে কাজ করতে গিয়ে কারও ধোঁকায় যাতে কেউ না পড়ে,                সে জন্য ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা প্রয়োজন বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যথাযথ প্রশিক্ষণ নিয়ে যারা বিদেশ যাচ্ছেন তারা নয়, বিপদে পড়ছেন যারা দালাল ধরে যাচ্ছেন তারা। তাদের বিপদ হলে উদ্ধারও করতে হয় সরকারকেই। তিনি বলেন, কর্মসংস্থানের নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করতে হবে। কোন দেশে কী কী দক্ষতা প্রয়োজন, সেভাবেই বহুমুখী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মী তৈরির ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রবাসে গিয়ে কারও ধোঁকায় কেউ যাতে না পড়েন, সে জন্য ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে। অবৈধভাবে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠালে তা অন্য খাতে চলে যায় জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অনেক সময় টাকা বেহাতও হয়ে যায়। তাই বৈধ পথে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠালে সবার জন্যই ভালো। বর্তমান সরকার বিদেশ থেকে বাংলাদেশে অর্থ পাঠানোর পদ্ধতি আরও সহজ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রয়োজনে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংককে এলাকাভিত্তিক এজেন্ট নিয়োগ দিতে হবে। আমাদের দক্ষ জনশক্তি পাঠাতে হবে এবং সে জন্য আমরা কর্মীদের জন্য বহুমুখী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। যদি আমরা যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি পাঠাতে পারি, তাহলে আমাদের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা অর্জনের বড় সুযোগ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা (প্রবাসী) যদি হুন্ডির মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স পাঠান, তবে তা হয়তো আপনাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে পৌঁছায় এবং তারা তা ব্যয় করে। কিন্তু এতে যিনি এই অর্থ পাঠাচ্ছেন তার কোনো সঞ্চয় হয় না। তিনি আরও বলেন, কখনো কখনো প্রেরিত অর্থ অপব্যয় করা হয়। শেখ হাসিনা বলেন, অনেক প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফেরার পর দেখেন যে- দেশে তার কোনো টাকা নেই এবং অনেককে এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এ ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, যারা ব্যাংকিং বা আইনি মাধ্যমে টাকা পাঠায়, সরকার তাদের সেই রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রণোদনা দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আপনি (প্রবাসী) যদি ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠান, তবে আপনার যতটা প্রয়োজন ততটা খরচ করবেন এবং বাকিটা সঞ্চয় হবে। আপনি দেশে ফিরে এই সঞ্চয় ব্যবহার করতে পারেন। তিনি আরও বলেন, প্রবাসী শ্রমিকরা দেশে ফেরার পর তাদের সঞ্চয়কৃত অর্থসহ ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী এ লক্ষ্যে ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার সারা দেশে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করেছে এবং বিদেশি চাকরিপ্রার্থীরা কেন্দ্রগুলো পরিদর্শনের মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে নিজেদের নিবন্ধন করতে পারেন। তিনি বলেন, যদি তারা (বিদেশি চাকরিপ্রার্থীরা) উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদেশে যান, তাহলে আর বিপদে পড়বেন না।’ নারী শ্রমিকদের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যারা সঠিক পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদেশে কর্মসংস্থানে যাচ্ছেন- তারা ভালো আছেন। কিন্তু যারা দালালদের খপ্পরে পড়েছেন তারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তাই এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সরকার যে লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ক্যাম্পেইন চালু করেছে, সে কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন দেশ তার ফল পেতে শুরু করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে দেশে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে এবং মানুষ বেশি আয় করছে। একজন দিনমজুর আগে দিনে ২০০-৩০০ টাকা আয় করত, এখন কাজের ধরনের ওপর নির্ভর করে প্রতিদিন ৬০০-১০০০ টাকা আয় করতে পারে। সর্বনিম্ন আয় ৫০০-৬০০ টাকা। গ্রামাঞ্চলে এই পরিমাণের চেয়ে বেশি আয় হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধান কাটার মৌসুমে দিনে তিন বেলা খাবারসহ মজুরির পরিমাণ ৭০০-৮০০ টাকা। গ্রামীণ অর্থনীতির অনেক উন্নতি হয়েছে। কেউ যদি গ্রামাঞ্চলে যায় তবে দেখা যাবে যে গ্রামীণ এলাকায় জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত হয়েছে। মানুষ সচ্ছল হয়ে ওঠায় মাঝে মাঝে শ্রমিকের অভাবও দেখা যায়।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]