মুসলমানের জীবনে রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি। রহমতের দশক শেষে মাগফেরাতের বার্তা নিয়ে শুরু হলো ক্ষমার দশক। রমজান যেমন অন্যান্য মাস অপেক্ষা অধিক মর্যাদাপূর্ণ তেমনি এ মাসের ইবাদত অন্য মাসের ইবাদত-বন্দেগির চেয়ে মর্যাদাবান। কিন্তু কেন?
মুমিনের প্রতিটি নেক আমলের ফজিলত ও সওয়াব অনেক বেশি। যা দ্বারা মহান রাব্বুল আলামিন আমলকারীকে পুরস্কৃত করবেন। কিন্তু রোজার বিষয়টি একেবারেই স্বতন্ত্র। কারণ, রোজার বহুবিধ প্রতিদান ছাড়াও এ বিষয়ে একটি অতুলনীয় ঘোষণা রয়েছে। হাদিসে পাকে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মানুষের প্রত্যেকটি আমলকে বৃদ্ধি করা হয়। একটি নেকি (সওয়াব) ১০ গুণ থেকে (ক্ষেত্র বিশেষে) ৭০০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কিন্তু রোজার ব্যাপারটি ভিন্ন। কারণ, রোজা আমার জন্য। সুতরাং এর প্রতিদান আমি নিজেই প্রদান করব।’ (বুখারি ১৮৯৪, মুসলিম ১১৫১/১৬৪)
অন্যান্য সব আমলের সওয়াব বৃদ্ধির ব্যাপারে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু রোজার ব্যাপারটি ভিন্ন। সাধারণ তাহলো- ১০ গুণ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত। এটি সাধারণ নিয়ম। আল্লাহ তাআলা চাইলে বিশেষ ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশিও প্রদান করতে পারেন। তবে সাধারণত সব আমলের সওয়াব এ নীতির মাধ্যমেই নির্ণিত হয়।
কিন্তু রোজার বিষয়টি স্বতন্ত্র। কারণ, এর সওয়াবের নির্ধারিত কোনো সীমারেখা নেই; বরং আল্লাহ তাআলা নিজে এর সওয়াব প্রদানের ঘোষণা করেছেন। এর পরিমাণ যে কত হবে, তা একমাত্র তিনিই জানেন। রোজার এত বড় ফজিলতের একটি বাহ্যিক কারণ এও হতে পারে যে, রোজা ধৈর্য্যের ফলস্বরূপ। আর ধৈর্যধারণকারীদের জন্য আল্লাহ তাআলার সুসংবাদ হলো-
اِنَّمَا یُوَفَّی الصّٰبِرُوۡنَ اَجۡرَهُمۡ بِغَیۡرِ حِسَابٍ
‘ধৈর্য্য ধারণকারীগণই অগণিত সওয়াবের অধিকারী হবে।’ (সুরা যুমার : ১০)
মনে রাখতে হবে
সব ইবাদত আল্লাহর জন্য। রোজার বহুবিধ বিশেষত্বের কারণে শুধু একেই মহান রাব্বুল আলামিন নিজের জন্য বিশেষ করে নিয়েছেন এবং বলেছেন, ‘রোজা তো আমারই জন্য।’ তাই রোজার প্রতিদান তিনি নিজেই দান করবেন। বে-হিসাব দান করবেন বলে তিনি রোজাদারকে সুসংবাদ দান করেছেন। (লাতায়িফ : ১৬৮-১৭০)
আল্লাহ তাআলা সবাইকে রমজানের প্রতিটা মুহূর্ত ইবাদতে কাটানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।