হাজারও বাধা-বিপত্তি পেড়িয়ে বোরকা পরে, নেকাবে মুখ ঢেকেই গানের জগতে দুনিয়া কাঁপাচ্ছেন পাকিস্তানের সংখ্যালঘু বালোচ উপজাতির র্যাপ গায়িকা ইভা বি। ফিউশনধর্মী গানের জন্য বিশ্বজুড়ে খ্যাতি পাওয়া কোক স্টুডিওর ‘কানা ইয়ারি’ গানটি ইভাকে রাতারাতি জনপ্রিয় করে তোলে। ইতোমধ্যে গানটির ভিউ ১০ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে। নারীর হিজাব পরিধানকে প্রতিভা বিকাশে বাধা মনে করেন না এই পাকিস্তানি নারী র্যাপার।
আমেরিকান র্যাপার এমিনেমের গান শুনেই র্যাপ গাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ইভা বি। ২০১৪ সালে গানে পথচলা শুরু করেন তিনি। কিন্তু ভাইয়ের কটূক্তি শুনে পরের বছরেই গান গাওয়া থামিয়ে দেন। চার বছর গান গাওয়া থেকে দূরে ছিলেন এই গায়িকা। সে সময় কলমকে হাতিয়ার করেই নিজের দেশের মেয়েদের কথা বলছিলেন তিনি। তার এই লড়াইয়ে পাশে ছিলেন মা। আর তাই ডান হাতের উল্কিতে ‘মা’ কথাটি লিখে রেখেছেন এই র্যাপার।
একটা সময় তার অদম্য ইচ্ছার কাছে হার মানে তার পরিবারের বাধা নিশেধ। ভাইয়ের কাছ থেকে গান গাওয়ার অনুমতি পান ইভা, তবে একটি শর্তে। আর সেই শর্তটি ছিল বোরকা পরতে হবে। শর্ত মেনেই গান চালিয়ে যান ইভা বি।
সবসময় হিজাব পরে গান গাওয়া ইভার জন্ম পিতৃতান্ত্রিক কঠোর শাসনের পরিবারে। তিনি যে সমাজ থেকে উঠে এসেছেন, সেখানে খুব কম সংখ্যক নারীই চাকরি করেন। তেমন একটি পরিবেশে কোনো নারীর র্যাপ গান গাওয়া সমাজ সহজভাবে নিতে না পারাটাই স্বাভাবিক। এ ছাড়া সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে এমনিতেই তাদের জীবনে নানা প্রতিকূলতা। গানের ক্ষেত্রে তার প্রথম বাধা আসে পরিবার থেকেই। কিন্তু নিজের লক্ষ্যে অটুট ছিলেন ইভা। বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার কথা বলে রেকর্ডিংয়ে যেতেন তিনি। এ ছাড়াও কোক স্টুডিওতে গানটি রেকর্ড করার আগে কীভাবে রিহার্সাল করবেন সেটা বুঝতে পারছিলেন না ইভা। শেষমেশ বন্ধুর বিয়ের মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে রিহার্সাল চালিয়ে গেছেন এই নারী র্যাপার।
রাজশাহীর সময় /এএইচ