উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে, নগরীতে ভাংড়ী ব্যবসায়ীকে ধরে চুরি মামলা দিলো মতিহার থানা পুলিশ!


স্টাফ রিপোর্টার : , আপডেট করা হয়েছে : 19-02-2022

উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে,  নগরীতে ভাংড়ী ব্যবসায়ীকে ধরে চুরি মামলা দিলো মতিহার থানা পুলিশ!

রাজশাহী মহানগরীর কাজলায় অবস্থিত মৃত আব্বাসের ভংড়ির দোকানের দুইজন কাজের ছেলেকে আটক করে চুরি মামলায় দিয়ে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। 

গ্রেফতারকৃতরা হলেন: মতিহার থানাধিন খোঁজাপুর এলাকার মোঃ খোরসেদ আলির ছেলে মোঃ জুয়েল আলি (২২) ও একই এলাকার মোঃ হাসেম আলীর ছেলে মোঃ সবুজ (৩০)। 

পুলিশের দাবি, গত (১৭জানুয়ারী) কাজলা (নয়ন পেট্রোল পাম্পের পিছনে), মাতৃছায়া বাড়িতে ৪০ হাজার টাকা মুল্যের বৈদ্যুতিক তার চুরি হয়েছে। ওইদিন রাত আড়াইটায় দারোয়ান ঘুম থেকে উঠে দেখেন তার চুরি হয়েগেছে। 

এদিকে আব্বাসের ভাংড়ির দোকানে বিভিন্ন বাসা বাড়ির বৈদ্যুতিক কাজ শেষে টুকরো ও বাতিল তার ক্রয় করে থাকেন আব্বাসের স্ত্রী ও সবুজ। আর সেই টুকরো বাতিল বৈদ্যুতিক তার ১-২-৩ কেজি করে ক্রয় করে যখন ১০ থেকে ১৫ কেজি হয় তখন তারা সেই তার গুলির ওপরে থাকা প্লাষ্টিক পুড়িয়ে তামা বের করে মহাজনের কাছে বিক্রি করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় (১৭ জানুয়ারী) বৃহস্পতিার বিকেলে রুয়েটের পাশে পরিত্যক্ত ফাঁকা স্থানে তারের প্লাষ্টিক পুড়িয়ে তামা বের করার কাজ করছিলো সবুজ ও তার সাথের কাজের লোক জুয়েল আলি। এ সময় মতিহার থানার এসআই সেলিম ও সঙ্গীয় ফোর্স তাদের আটক করে মতিহার থানায় নিয়ে যায়। 

আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই সেলিম জানান ওসি (তদন্ত) মোঃ মেহেদি হাসানের নির্দেশে আমি তাদের আটক করেছি। 

থানায় গিয়ে ওসি তদন্তের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, মাতৃছায়া বাড়িতে বৈদ্যুতিক তার চুরি হয়েছে। তাই তাদের আটক করা হয়েছে। তবে তিনি যাছাই বাছাইয়ের কোন প্রয়োজন মনে করেননি। গরিব অসহায় দুই যুবককে চুরির মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন।

খবর পেয়ে ওই দিনই মৃত আব্বাসের স্ত্রী থানায় গেলে তাকে প্রকাশ্যে ধমক দিয়ে থানা থেকে বের করে দেন ওসি তদন্ত মেহেদি হাসান। 

স্থানীয়রা জানায়, মতিহারে চুর ছিনতাইয়ের হাট বাজার। পুলিশ কোন চোর আটক করতেও পারেনা। স্থানীয়রা নিজেদের চেস্টায় মাঝে মধ্যে চোর ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। 

তারা আরো বলেন, অক্ট্রয় মোড়ে একাধিক বাসা-বাড়ি দোকানের তালা ভেঙ্গে চুরির ঘটনায় কোন চোর আটক বা মালামাল উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। 

আর সেই শিশু বেলা থেকে মৃত আব্বাসের দোকানে কাজ করে মোঃ সবুজ। ভাংড়ির দোকানের তার পুড়ানো দেখছি গত প্রায় ১০ বছর। তাকেই আবার চুরির মামলায় চালান। বড়দরবারের লোকের বাড়িতে চুরি হয়েছে বিধায় পুলিশ এই তৎপরতা দেখালো। মামলা দিলো কাজের লোককে।

আব্বাসের স্ত্রী জানান, করোনায় আব্বাসের মৃত্যু হয় গত বছর। এরপর বাচ্চাদের নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন তিন সন্তানের জননী আব্বাসের স্ত্রী। পরে কোন উপায় না দেখে সবুজকে নিয়ে ভাংড়ীর দোকানে ব্যবসা শুরু করেন। ভাংড়ির দোকানে ব্যবসা করে কোন রকম সংসার চলে তাদের। 

আব্বাসের স্ত্রী দোকানে বসে থাকে। কাস্টমাররা ভাংড়ী বিক্রি করতে আসলে দামাদামি করে মালামাল ক্রয় করে সবুজ। কারন মৃত আব্বাসের স্ত্রীর ব্যবসার বিষয়ে ধারনা একেবারেই নেই। তাই ব্যবসায় বিষয়ে গৃহবধূর একমাত্র ভরসা ছিলো সবুজই। এখন চুরির মামলায় আব্বাসের পালিত ছেলে সবুজ কারাগারে। ভাংড়ির দোকান বন্ধ। 

সবুজকে সাথে নিয়ে দোকান চালিয়ে কোন রকম সংসার চলছিলো। এখন সবুজ কারাগারে। আমি তো ব্যবসার কিছুই বুঝি না। তাই দোকান বন্ধ। কিভাবে বাচ্চাদের খাবারের যোগান দেবেন তিনি। সেই দুঃচিন্তা নিয়ে সবুজকে জামিনের জন্য বিভিন্ন লোকের দারস্থ হচ্ছেন এই বিধাব অসহায় মহিলা। 

অক্ট্রয় মোড়ে ব্যবসায়ী চা বিক্রেতা রহমান, থাই ব্যবসায়ী রনি, সম্ভু মার্কেটোর মালিক মিন্টু সহ একাধিক দোকানী বলেন, চুরির মামলায় সবুজকে দেয়া ঠিক হয়নি। সেই শিশু বেলা থেকে তাকে দেখছি ভাংড়ির দোকানে কাজ করতে। দোকানের কাজ ছাড়া অন্য কোন রিপোর্ট নাই তার। আর তাকেই দেয়া হয়েছে চুরির মামলা। এটা অন্যায় বলেও জানান তারা।

রাজশাহীর সময় / এফ কে

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]