কুমিল্লায় মো. সালাহ উদ্দিন ওরফে জহির (২৬) নামের এক কেব্ল নেটওয়ার্ক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে হোমনা উপজেলার ঘনিয়ারচর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
আহত অবস্থায় জহিরকে উদ্ধার করে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত জহির উপজেলার ঘনিয়ারচর গ্রামের মো. রেণু মিয়ার পুত্র।
নিহতের বড় বোন পারুল আক্তার জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁর ভাই সালাহ উদ্দিন ওরফে জহির ওয়াইফাই লাইনের সংস্কার করতে দুলালপুর যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। রাত ৮টার দিকে তাঁরা খবর পান তাঁর ভাইকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে উপজেলার কলাগাছিয়া স্টিল ব্রিজে ফেলে রেখেছে। সংবাদ পেয়ে তাঁর বড় ভাই আরশাদ মিয়া বাড়ির লোকজন নিয়ে জহরিকে উদ্ধার করতে কলাগাছিয়া স্টিল ব্রিজের দিকে রওনা হলে, দেশীয় অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা তাঁদের ধাওয়া করে। এরপর তাঁরা থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে ঘটনার প্রায় ৪০ মিনিট পর মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁরা জহিরকে সেখান থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
পারুল আক্তার জানান, কারা তাঁকে হত্যা করেছে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর তাঁর নিহত ভাই তাঁদের নিকট সব বলে গেছেন এবং সেগুলো মোবাইলে রেকর্ড করা হয়েছে।তিনি আরও জানান, তাঁদের গ্রামেরই ২০ / ৩০ জন লোক মিলে জহিরকে কুপিয়ে ও হাতুড়ি পেটা করে মৃত ভেবে ফেলে গেছে বলে জানিয়েছে জহির। পারুল আক্তারের অভিযোগ, খুনিরা তাঁর ভাইকে হত্যা করে রাতে এলাকায় এসে আতশবাজি ফুটিয়ে আনন্দ ফুর্তি করে ও বলতে থাকে, ‘এবার সব শেষ করে দিয়েছি।’ তিনি বিলাপ করতে করতে তাঁর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
নিহতের বড় ভাই আরশাদ মিয়ার অভিযোগ, গত ইউপি নির্বাচনে আছাদপুর ইউনিয়নে তাঁরা আওয়ামী লীগ প্রার্থী ছিদ্দিকুর রহমানের নির্বাচন করার কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান জালাল পাঠান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তাঁর ভাতিজা মোকবল পাঠানদের সঙ্গে তাঁদের শত্রুতার সৃষ্টি হয়। এ কারণে তাঁরা তাঁর ভাইকে খুন করে।
হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. সাহিদা সিকদার জানান, রাত ৯টার দিকে জহির নামে এক রোগীকে মুমূর্ষু অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন স্বজনেরা। রোগীর শরীরের বেশির ভাগ অংশেই জখম ছিল। বলা যায়, দুই পা ও দুই হাত প্রায় বিচ্ছিন্ন হওয়ার মতোই, ঘাড়েও ধারালো ছোরার আঘাত রয়েছে। হাতের তিনটি আঙুল বিচ্ছিন্ন ছিল। প্রচুর রক্তক্ষরণে রোগীর শরীর ঠান্ডা ও নিস্তেজ ছিল। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কায়েস আকন্দ বলেন, ‘লাশ ঢাকা মেডিকেল থেকে ময়নাতদন্তের জন্য নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা প্রক্রিয়াধীন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ খুনের সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাঁদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হবে।’
রাজশাহীর সময় /এএইচ