সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ থানাধীন হুরাসাগর নদী পানিতে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যু ব্যক্তির (৩২) রহস্য উদঘাটন করেছেন কামারখন্দ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নুরনবী প্রধান।
জানা যায়, (৭মার্চ) সকাল সোয়া ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে কামারখন্দ থানাধীন হুরাসাগর নদী পানিতে ঝাঁপ দিয়ে আনিসুল ইসলাম মন্ডল (২৯) নামের এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেন। তিনি পেশায় একজন অটোভ্যান চালক ছিলেন।
মৃত আনিসুল ইসলাম মন্ডল সে সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ থানার কর্ণসূর্তি গ্রামের মৃত রেজাউল মন্ডলের ছেলে।
পরে খররে পেয়ে কামারখন্দ উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ও কামারখন্দ থানা পুলিশ-সহ আশ পাশের লোকজন নদীর পানিতে খোঁজা খুঁজি করে আনিসুল ইসলাম মন্ডলের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় ওই দিনই কামারখন্দ থানায় একটি (ইউডি) অপমৃত্যুর মামলা রুজু হয়।
আত্মহত্যার পর থেকে রহস্য উদঘাটনে কামারখন্দ থানার ওসি মোঃ নুরনবী প্রধান এর নেতৃত্বে মাঠে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
তদন্তের এক পর্যায়ে তারা মৃত আনিসুলের মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হন।
মামলার বরাত দিয়ে ওসি জানান, মৃত রেজাউল ম-লের প্রতিবেশী জনৈকা সালেকা বেগম কিছুদিন আগে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। সে বিষয়ে কামারখন্দ থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা রুজু হয়। পরে ওই মহিলার আত্মীয় স্বজন মোঃ আলী (৫২), মোঃ আনোয়ার হোসেন (৩৬) সহ অজ্ঞাত আরো ২/৩ জন ওই নারী আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে মৃত আনিসুল ইসলাম মন্ডলকে দোষারোপ করে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এরই জেরে গত (৭মার্চ) সকাল ৮টার দিকে মৃত আনিসুল ইসলাম মন্ডল কামারখন্দ থানাধীন বলরামপুর বাজারে জনৈক সুজিত কুমার ঘোষের হোটেলে নাস্তা করছিলো। ওই সময় মৃত নারীর আত্মীয়রা হোটেলে প্রবেশ করেন। তাদের দেখে আনিসুর দ্রুত নাস্তা খাওয়া শেষ করে হোটেলের পিছনের দিকে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তারাও তার পিছু নিয়ে হোটেলের পিছনে যায়। ওই সময় তারা একই বিষয়কে কেন্দ্র করে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মৃত আনিসুলের লুঙ্গী খুলে নেয়। মানসম্মান ও ইজ্জত রক্ষা সহ মিথ্যা অপবাদ থেকে রেহাই পেতে (৭মার্চ) সকাল সোয়া ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে কামারখন্দ থানাধীন হুরাসাগর নদী পানিতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। এতে প্রমানিত হয় যে, উপরোক্ত আসামীদের প্ররোচনায় মৃত আনিসুল ইসলাম অপমানের জ্বালা থেকে মুক্তি পেতেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন।
ওসি আরও বলেন, এ ব্যপারে বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) আনিসুল ইসলাম মন্ডলের আপন মামা মোঃ এরশাদ আলী শেখ বাদী হয়ে কামারখন্দ থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনার দায়ে ৩০৬/৩৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা আসামীরা হলো: কামারখন্দ থানার আশরাফ আলী আকন্দের ছেলে মোঃ ফজল আলী (৫২), মোঃ আব্দুল হামিদের ছেলে মোঃ আনোয়ার হোসেন অরফে হোসেন (৩৬) সহ অজ্ঞাত আরো ২/৩ জন। আসামীদের মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ বলেও জানান ওসি।