হরিদেবপুরের তরুণী খুনের পরতে পরতে রহস্য। ডালিয়া চক্রবর্তীকে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত অরুণাভ পাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । তাঁকে ম্যারাথন জেরার পর পুলিশের হাতে এসেছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। অরুণাভর পেশা সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। যারমধ্যে রয়েছে মধুচক্র।
পুলিশ জেরায় জানতে পেরেছে, অরুণাভর সঙ্গে তাঁর আলাপ ২০২০ সাল থেকে। সূত্রের খবর, অবৈধ সিকিউরিটি সার্ভিস চালাতেন অরুণাভ। পরে মধুচক্রের দালালি শুরু করেন। ডালিয়ার সঙ্গে সেখানেই আলাপ অরুণাভর। এরপরই তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তালে কি এই মৃত্যুর কারণ, শুধু টাকার হিসেব নয়! নাকি এই মৃত্যুর নেপথ্যে রয়েছে মধুচক্র এবং পরকীয়ার সম্পর্ক!
ডালিয়া যদিও এই র্যাকেটে ছিলেন কিনা এখনও জানা যায়নি। তবে মধুচক্র ও এসকর্টের ব্যবসায় যুক্ত এক মহিলার বাড়িতেই ডালিয়ার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল অরুণাভর। এই মধুচক্রে যে অনেক মহিলা রয়েছেন সে ব্যাপারে পুলিশের কোনও সন্দেহ নেই। লালবাজার মনে করছে, মধুচক্রের দালালি মানেই কাঁচা টাকার ব্যবসা। সেই সূত্রেই এই খুন কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কারণ, প্রাথমিকভাবে জেরায় অরুণাভ জানিয়েছেন, টাকাপয়সা সংক্রান্ত বচসা থেকেই এই খুনের ঘটনা ঘটিয়েছিলেন তিনি।
মধুচক্রের এই র্যাকেট অনেক সময়েই বহুদূর অবধি বিস্তৃত থাকে। জাতীয় এমনকি আন্তর্জাতিক চক্রের সন্ধানও পাওয়া যায়। বিশেষত নেপাল, ভুটান, মায়ানমারের যোগ পাওয়া যায় অনেক সময়ে। এক্ষেত্রে শিকড় কত গভীরে তা স্পষ্ট হয়নি বুধবার দুপুর পর্যন্ত।
অরুনাভ বিবাহিত। তাঁর পরকীয়ার কথা জানা গেছে। পুলিশি জেরায় তিনি জানিয়েছেন, ডালিয়াকে খুন করে হরিদেবপুরের রাস্তার ধারে দেহ ফেলে রেখে গেছিলেন। এমনকি খুন করে, দেহ গুম করে, নিজের শ্বশুর বাড়িও গেছিলেন! খুনের মোটিভ দেখে পুলিশের ধারণা, খুব ঠান্ডা মাথায় খুন করেছেন অরুণাভ।
জানা গিয়েছে, অরুণাভর হরিদেবপুরের ভাড়া ফ্ল্যাটে প্রায়ই আসতেন ডালিয়া। সোমবারও তাঁর কাছ থেকে মধুচক্রের দালালি বাবদ চার হাজার টাকার জন্য গিয়েছিলেন তিনি। আর সেই নিয়েই তাঁদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে ডালিয়াকে খুন করে অরুণাভ।
প্রসঙ্গত, দোলের দিন সাতসকালে রাস্তার ধারে মহিলার মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছিল হরিদেবপুর এলাকায়। তারপরই পুলিশি তৎপরতায় গ্রেফতার করা হয় অরুণাভকে।