দুবাই ও মালয়েশিয়া থেকে প্রবাসীদের পাঠানো স্বর্ণালংকার ও অর্থ আত্মসাৎ করে বগুড়ার বিএনপি উপজেলা নেতা শাওন আহমেদ। সেই অর্থের একাংশ আবার রাজনীতিতেও খরচ করতেন তিনি।
সম্প্রতি শাওন আহমেদকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান।
দুবাই থেকে দেশে ফেরার সময় সহকর্মীর বোনের বিয়ের জন্য পাঠানো ২৮ ভরি স্বর্ণ, দামি মোবাইল ও ল্যাপটপ স্বজনদের বুঝিয়ে না দিয়ে আত্মসাৎ করেছিলেন শাওন। পরে স্বর্ণালংকার বিক্রির টাকা দিয়ে তার শ্বশুরবাড়ি বগুড়ার শারিয়াকান্দিতে পাকা দালান তৈরির কাজে হাত দিয়েছিলেন।
শাওনকে গ্রেফতারের সংবাদ প্রচারের পর অনেকেই যোগাযোগ করেন গোয়েন্দা কার্যালয়ে। তাদের অভিযোগ, শুধু বিদেশে নয়, দেশেও তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন অনেকেই।
দেশে থাকা অবস্থায় শাওন নিজেকে একটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক পরিচয় দিতেন। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানকে লন্ডনের এয়ার টিকিট কেটে দেয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে হাতিয়ে নেন লাখ টাকা। এ রকম অনেকের কাছ থেকেই তিনি ভুয়া ট্রাভেল এজেন্সির মালিক পরিচয় দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এ চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি তাকে ইমারজেন্সি টিকিট কাটার জন্য ১ লাখ ১৯ হাজার টাকা দেই। ওই টাকা তার কাছে তিন মাস থাকার পর আমি আবারও একই টাকা দিয়ে তুর্কি এয়ারলাইন্সের টিকিট কেটে আমার ছেলেকে লন্ডনে পাঠাই।’
দেশে প্রতারণার পর্ব শেষ করে শাওন পাড়ি জমান বিদেশে। মালয়েশিয়া এবং দুবাইতে দীর্ঘদিন থাকলেও দেশে এক পয়সাও রেমিট্যান্স পাঠাননি। দেশে ছুটি কাটানোর কথা বলে অনেক প্রবাসীর পাঠানো মূল্যবানসামগ্রী আত্মসাৎ করাই ছিল তার মূল কাজ।
মশিউর রহমান বলেন, কখনো সে মালয়েশিয়াতে আবার কখনো তিনি দুবাইয়ে গেছেন। মালয়েশিয়াতে সে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে বাংলাদেশে আসার সময় তাদের মূল্যবান সামগ্রী মোবাইল, টাকা অথবা স্বর্ণালংকার নিয়ে সেগুলোকে আত্মসাৎ করেছেন। প্রবাসীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া টাকা তিনি খরচ করতেন রাজনীতিতে।
ডিবির এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তিনি বগুড়ার একটা উপজেলার বিএনপির নেতা। আমরা দেখেছি, সে সেখানে অনেক প্রচারপত্র বিলি করে, মিছিলে নেতৃত্ব দেয় এবং একজন বিএনপি নেতার সঙ্গেও তার অনেক ঘনিষ্ঠ ছবিও আছে।
শাওনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের সব অভিযোগ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।