এবার তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলের প্রদেশগুলোতে কম্পন অনুভূত হয়েছে।
ইউরোপিয়ান-মেডিটেরিনিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমএসসি) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.৬। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল তুরস্কের মালাতিয়া প্রদেশের ইয়েসেলিরুত শহরে। ইয়েসেলিরুতের মেয়র মেহমেত সিনার হেবারতুর্ক জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে শহরটির বহু বাড়িঘর, বহুতল ভেঙে গেছে। অন্তত ৬৯ জন জখম হয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রাণহানি হয়েছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত করে জানা যায়নি।
একের পর এক এক কম্পনে কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে দু’টি দেশ। ভূমিকম্প বিধ্বস্ত সেই তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃত্যু সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫০ হাজার। যদিও অনেকের মতে, বেসরকারিভাবে এই সংখ্যাটা আরও বেশি।
তুরস্ক সরকার জানিয়েছে, তাদের দেশে ৪৪ হাজার ২১৮ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। সিরিয়ায় মৃত্যু সংখ্যা পাঁচ হাজার ৯১৪। দু’টি দেশ মিলিয়ে মৃত্যু সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫০ হাজার। ৬ ফেব্রুয়ারি পরপর ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল তুরস্ক ও সিরিয়া। এখনও দু’দেশে উদ্ধার কাজ চলছে। প্রতিদিনই ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হচ্ছে পচাগলা দেহ। তার মধ্যেই মাঝে মাঝে কেঁপে উঠছে দেশের নানা অংশ।
অত্যধিক ভূমিকম্পপ্রবণ এই দেশ ধ্বংসের রূপ দেখেছিল ১৯৩৯ সালেই। এক প্রচণ্ড ভূমিকম্প তছনছ করে দিয়েছিল সব। পায়ের তলা থেকে কেড়ে নিয়েছিল মাটি। ৮৪ বছর পরে ফের সে ফিরে আসবে তেমন পূর্বাভাস ছিলই। দিনকয়েক আগেই বিজ্ঞানীরা ভূস্তর পরীক্ষা করে সতর্ক করেছিলেন তার আসার সময় হয়েছে। কতটা ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে সে আসবে জানা নেই, তবে ক্ষতি কিছু কম হবে না। তাই হয়েছে। নিরূপায় মানুষ প্রকৃতির হাতে নিজেদের সমর্পণ করে মৃত্যুর প্রহর গুনেছে। গত কয়েকদিনে একাধিকবার কম্পন আর শতাধিক আফটার শক (ভূমিকম্পের পরবর্তী কম্পন) মিলে গ্রাস করেছে দেশটাকে। মৃত ৫০ হাজারের বেশি, আহতের সংখ্যা গোনাই যায়নি। বোধকরি আর সংখ্যা গোনার মতো মানুষজনও নেই। হাজার হাজার পরিবার ধ্বংসস্তূপের নীচে পিষে নিঃশেষ হয়ে গেছে। শোকপালনের মতোও কেউ অবশিষ্ট নেই।