ইউক্রেনে রাশিয়ার সৈন্য প্রত্যাহারের পাশাপাশি যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘের বিশেষ অধিবেশনে আনা প্রস্তাবে ‘ভোটদানে বিরত’ থাকায় বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে মস্কো। ওই প্রস্তাবে ইউক্রেনের পক্ষে জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যের মধ্যে ১৪১ সদস্য ভোট দিয়েছে। এ ছাড়া রাশিয়াসহ সাতটি দেশ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। বাংলাদেশ ও ভারতসহ ৩২টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল।
বাংলাদেশকে ধন্যবাদ দিয়ে ঢাকায় রাশিয়া দূতাবাস শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় একটি টুইটও করেছে। টুইটে বলা হয়েছে, ‘রাশিয়াবিরোধী এমন প্রস্তাব পাস করে ইউক্রেন ‘সংঘাতের’ অবসান ঘটানো যাবে না।’
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘে বিশেষ অধিবেশন বসে। অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রুশ অভিযানের নিন্দা জানিয়ে একটি প্রস্তাব পাস হয়। একইসঙ্গে ইউক্রেন থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাশিয়াকে আহ্বান জানানো হয়।
জাতিসংঘ সনদের নীতির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অনুযায়ী ইউক্রেনে একটি ন্যায্য ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা শীর্ষক রেজুল্যুশনটি পাস হয় চলতি সাধারণ পরিষদের ১১তম বিশেষ অধিবেশনে। এতে ভোটাভুটিতে জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যের মধ্যে ১৪১ সদস্যের সমর্থন পায় কিয়েভ। অন্যদিকে বেলারুশ, সিরিয়িাসহ প্রস্তাবের বিরোধিতা করে সাত সদস্য রাষ্ট্র। এছাড়া বাংলাদেশ, ভারত ও চীনসহ ৩২টি সদস্য রাষ্ট্র ভোটদান থেকে বিরত ছিল।
দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ছয়টি বড় প্রস্তাব পাস হয়েছে। বৃহস্পতিবার পাস হওয়া প্রস্তাবটিকে নন-বাইডিং রেজুল্যুশন বলা হচ্ছে। এর অর্থ, এটি মানার ক্ষেত্রে কোনো দেশের ওপর আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই।
এদিকে ইউক্রেনে রুশ হামলা বিশ্ব বিবেকের প্রতি অবমাননাকর বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। যুদ্ধের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সাধারণ পরিষদের বৈঠকে তিনি আরও বলেন, আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতাকে রীতিমতো উসকে দিয়েছে মস্কো। এসময় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্টের পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি স্থগিতের কড়া সমালোচনা করেন গুতেরেস।
এদিকে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা বলেন, ভোটের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে কে কার পক্ষে। রাশিয়াকে অবশ্যই তার অবৈধ আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল রাশিয়া। তারপর থেকে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় শান্তিপ্রস্তাব নিয়ে একাধিক ভোট হয়েছে। ২০২২ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব পাস হয়। ওই প্রস্তাবেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল বাংলাদেশ। নভেম্বরের ওই প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য এবং ইউক্রেনে আক্রমণের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির জন্য প্রত্যাবাসন ও প্রতিকার ব্যবস্থা তৈরির জন্য রাশিয়াকে জবাবদিহি করার আহ্বান জানানো হয়। তবে তার আগের মাস অক্টোবরে জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিল বাংলাদেশ।