মাত্র ৫ বছর বয়স তখন। প্লেনে চড়ে বাবা-মার সঙ্গে নিউ ইয়র্ক গিয়েছিলেন। ভ্রমণের প্রতি ভাল লাগার সেই শুরু। ওইটুকু বয়সেই ঠিক করে নিয়েছিলেন, বড় হয়ে দেশ দেশান্তরে ঘুরে বেড়াবেন। কিন্তু বাধ সেধেছিল শারীরিক অবস্থা। বিরল অসুখে আক্রান্ত হয়ে ৭ বছর বয়স থেকেই হুইলচেয়ারে বন্দি রেনি। কিন্তু অদম্য জেদ আর ইচ্ছেের সামনে হার মেনেছিল প্রতিবন্ধকতা। হুইলচেয়ার-বন্দি হয়েও এক বছরে পৃথিবীর ৫৫টি দেশ ঘুরে ফেলেছেন তিনি ! গিনেস বুকেও নাম উঠেছে তাঁর।
রেনি ব্রুন্স জর্জিয়ার আটলান্টার বাসিন্দা। ২০২২ সালেই এক বছরে সর্বাধিক সংখ্যক দেশ ভ্রমণ করার জন্য গিনেস বুকে নাম তুলেছিলেন তিনি। তবে তার শংসাপত্র সম্প্রতি হাতে এসেছে তাঁর। গিনেস বুক কমিটির তরফ থেকে ইমেল মারফত শংসাপত্রটি পাঠানো হয় তাঁকে। সেটি প্রিন্ট আউট বের করে বাঁধিয়ে হুইলচেয়ারে বসে হাতে ধরে হাসি মুখে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ভক্তদের সঙ্গে তা ভাগ করে নিয়েছেন তিনি।
‘যা কেউ ভাবতেও পারে না, ইচ্ছে থাকলে তাও সম্ভব,’ এটাই রেনির জীবনের মূলমন্ত্র। মাত্র ৭ বছর বয়স থেকেই হুইলচেয়ার ব্যবহার করা শুরু হয়েছিল। তখনও আশা ছিল, একদিন না একদিন হুইল চেয়ার ছেড়ে নিজের পায়ে উঠে দাঁড়াবেন। কিন্তু সেই আশা পূর্ণ হয়নি। ১৬ বছর বয়স তখন, ধরা পড়ে ডায়াস্ট্রফিক ডোয়ারফিজমে আক্রান্ত তিনি, সারাজীবনই হুইলচেয়ারে বসেই কাটাতে হবে তাঁকে। প্রাথমিকভাবে দমে গিয়েছিলেন রেনি। কিন্তু তারপরেও হাল ছাড়েননি। বরং একটি বিমা সংস্থায় কাজ নেন। টাকা জমিয়ে একটু একটু করে শুরু করেন এদেশ-ওদেশ ঘুরে বেড়ানো।
তারপর একটা বছর পুরোটাই বেড়ানোর জন্য উৎসর্গ করে দেন রেনি। ৩৬৫ দিনে ৫৫টি দেশ ঘুরে বিশ্ব রেকর্ড করেন। এখনও পর্যন্ত ১১৭টি দেশে ঘুরে ফেলেছেন রেনি। পেরু, কম্বোডিয়া, তুরস্ক এবং কেনিয়াও ঘোরা হয়ে গেছে তাঁর। যেখানে যেখানে যাওয়া হয়নি, অদূর ভবিষ্যতে সেইসব দেশও ঘুরে দেখবেন, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ রেনি।