বাংলা ভাষার বিকৃতির বিরোধিতা ও সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে জাতি ভাষার জন্য রক্ত দেয়, তাদের ইংরেজি অ্যাকসেন্টে (উচ্চারণ) বাংলা বলার দৈন্য ঠিক নয়।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ‘মহান শহীদ দিবস’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সভার আয়োজন করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বটাই সবার একটা আবাসস্থল। সেখানে অন্য ভাষাও শেখা যাবে। তবে মাতৃভাষার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া দরকার। আমাদের মাঝে একটা প্রচলন দেখি, ইংরেজি অ্যাকসেন্টে (উচ্চারণে) বাংলা ভাষায় কথা বলার প্রবণতা। আমি মনে করি, এটা জঘন্য। তবে আঞ্চলিক টান দোষের নয়, এটা থাকবেই। পৃথিবীর সব জায়গায় আছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে কোথা থেকে এটা আসলো, তা জানি না। ছেলেমেয়েদের ইংরেজি মিডিয়ামে পড়াতে গিয়ে মাতৃভাষার আসল ধ্বনিটা পরিবর্তন করে বিজাতীয় ভাষার ধ্বনির সঙ্গে মিলিয়ে বাংলাটাকে ইংরেজি অ্যাকসেন্টে (উচ্চারণে) বলা হচ্ছে, এটা কেন? নিজের এলাকার বা নিজের ভাষাটা কেন বলবো না? যে জাতি ভাষার জন্য রক্ত দেয়, তাদের দৈন্য ঠিক নয়।’
রাজনৈতিক বিষয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের দেশে কিছু মানুষ আছে, তারা অসময়ে নীরব, সুময়ে সরব হয়ে ওঠেন। ১০ ডিসেম্বর নিয়ে হম্বতম্বি করেছে। আমাদের অনেক নির্যাতন করেছে। কিন্তু আমরা নির্যাতনের পথে যাইনি, উন্নয়নের পথে আছি। তারপরও বিদেশে গিয়ে কান্নাকাটি করে আসে। তাতে লাভ নেই। বাংলাদেশের মানুষ সব জানে, তারা সব বোঝে। আজকে বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে গেছে। আমরা সেটা করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা যে আগুন নিয়ে খেলেছিল; বাসে আগুন, গাড়িতে-বাড়িতে আগুন দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ যদি তাদের সঙ্গে আগুন নিয়ে খেলে, তাহলে কী হবে, সেটা কী তারা ভেবে দেখেছে? যারা নিজ দেশের টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করে, অগ্নিসন্ত্রাস করে, তাদের কাছে মানুষ কী আশা করবে?’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। সেজন্য জনগণের ভোটের অধিকার, যা আওয়ামী লীগ দেশে প্রতিষ্ঠিত করেছে। অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীর হাতে যে সংগঠন গড়ে উঠেছে, সেটাও তো অবৈধ। দেশবাসী যেন সেটাকে অবৈধ হিসেবেই দেখে।’
শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, কার্যনির্বাহী সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটার্জি, ঢাকা উত্তরের সভাপতি বজলুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।
এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ বক্তব্য রাখেন। কবিতা আবৃত্তি করেন কবি তারিক সুজাত।