বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকা


অর্থনীতি ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 20-02-2023

বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকা

২০২২ সালে নানা সংকটে কেটেছে দেশের শিল্প খাত। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে অর্থনীতিতে টালমাটাল অবস্থার তৈরি হয়। এর মধ্যে শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ডলার সংকট। যার প্রভাব পড়েছে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে। এজন্য শিল্পে উৎপাদন ঠিক রাখতে নানা সুবিধা দেয়ার পাশাপাশি ঋণ পরিশোধেও দেয়া হয়েছে অনেক সুবিধা। এরপরও বছরের ব্যবধানে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা।

তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। মোট ঋণের ৮ দশমিক ১৬ শতাংশই খেলাপি। একবছর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিলো ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা। সে সময়ে এটি ছিলো মোট ঋণের ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৭ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা।

আরও জানা যায়, বছরের শেষ প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের হার ছিলো নিন্মগামী। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের চেয়ে ডিসেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ কমেছে ১৩ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ছিলো ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক থেকে ডিসেম্বর প্রান্তিকে দেশে ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৪১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। আর খেলাপি ঋণ কমেছে ১৩ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা। আলোচিত সময়ে প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) ঘাটতি কমেছে ২ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। এছাড়া খেলাপি ঋণের মধ্যে মন্দ ঋণের পরিমাণ ৮৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। টাকার অঙ্গে যার পরিমাণ ১ লাখ ৬ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা।

দেশের ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি ঋণের ৪৬ দশমিক ৭৯ শতাংশই সরকারি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর। ব্যাংকগুলোর খেলাপির পরিমাণ ৫৬ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা, যা ওই কয়েকটি ব্যাংকের মোট ঋণের ২০ দশমিক ২৮ শতাংশ। অথচ আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে খেলাপির পরিমাণ ৩ শতাংশের বেশি হওয়ার কথা নয়।

এদিকে আইএমএফের ঋণের সব অর্থ পেতে সরকারি ব্যাংকগুলোর ঋণ ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার শর্ত রয়েছে। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে এর পরিমাণ ৫ শতাংশের নিচে হতে হবে। বর্তমানে বেসরকারি ব্যাংকগুলো মোট ঋণের ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ আর বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ১২ দশমিক ৮০ শতাংশ। আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার ৪ দশমিক ৯১ শতাংশ। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশকে আইএমএফের ঋণের সব কিস্তি পেতে হলে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনায় আরো তৎপর হতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এদিকে ২০২২ সালের শেষে দেশের ব্যাংক খাতের প্রভিশন সংরক্ষণের কথা ছিলো ৮৪ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা। কিন্তু ব্যাংকগুলো সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে ৭৩ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। আর ঘাটতি রয়েছে ১১ হাজার ৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঘাটতি ৮ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট প্রভিশন ঘাটতি ৮০ শতাংশই রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর। আর বাকি ২ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা ঘাটতি বেসরকারি ব্যাংকগুলোর।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]