‘আমার ৪০ বছরের জীবনে সবচেয়ে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা’


আন্তর্জাতিক ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 06-02-2023

‘আমার ৪০ বছরের জীবনে সবচেয়ে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা’

তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় খানমারমারাস প্রদেশের বাসিন্দা এরদেম সোমবার শেষরাতে ঘুম থেকে উঠেছেন ভূমিকম্পের কম্পনে। সোমবার রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘আমার বয়স ৪০ এবং জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা আমার হলো আজ।’

‘ভোর সোয়া চারটার দিকে ঘুম ভেঙে গেল। জেগে উঠেই দেখলাম— বাড়ির সবকিছু ভয়াবহ ভাবে কাঁপছে। কী করব বুঝে উঠতে না পেরে খাট থেকে নামলাম তখন মনে হলো দোলনায় যেভাবে শিশুকে দোলানো হয়, সেইভাবে আমি দুলছি।’

‘কয়েক সেকেন্ড আমি দাঁড়িয়েছিলাম, কিন্তু দুলুনি থামছিল না। ভূমিকম্প হচ্ছে—বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গে আমি ঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে গেলাম। নিচে নেমে দেখলাম, ভবনের সব মানুষ বাইরে। তারা সাবাই আতঙ্কিত ছিল। ইতোমধ্যে অনেকে নিজেদের ব্যক্তিগত গাড়িতে ভবন ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে আশায় বের হয়ে গেছে।’

তুরস্কের পাজারকিক শহরের বাসিন্দা নিহাত আলতুনদাগ দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা ভূমিকম্পের কম্পনে ঘুম থেকে জেগে উঠি। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আমি বাইরে বের হওয়া মাত্র যে অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে আমি থাকতাম, সেটি ধসে পড়ল। নিচে নামার কয়েক মিনিটের মধ্যে দেখলাম— ২০০ মিটার দূরের আরেকটি ভবনও ধসে পড়ছে।’

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের বাসিন্দা সামের রয়টার্সকে বলেন, ‘সোমবার ভোরে আমার ঘুম ভেঙেছে কাচের জিনিস ভাঙার শব্দে। ঘুম ভেঙে দেখলাম ঘরের সবকিছু দুলছে। আমি দ্রুত ছুটে বের হয়ে এসেছি।

স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৪ টা ১৭ মিনিটে জোড়া ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও সিরিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস এক বিবৃতি অনুযায়ী, পর পর দু’টি ভূমিকম্প হয়েছে তুরস্কে। প্রথমটি হয়েছে ভোর ৪ টা ১৭ মিনিটে এবং সেটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮; দ্বিতীয়টি ঘটে তার ১৫ মিনিট পর। সেটি মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৭।

দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় খারমানমারাস প্রদেশের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্প দু’টির উৎপত্তিস্থল। তুরস্ক-সিরিয়ার পাশাপাশি লেবানন ও সাইপ্রাসেও কম্পন অনুভূত হয়েছে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এএফপি।

ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় এক হাজারেরও বেশি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন দুই দেশের উদ্ধারকর্মীরা।

তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, দেশটির ৮১টি প্রদেশের মধ্যে আটটি প্রদেশে গুরুতর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দুর্যোগ পরিস্থিতি ও উদ্ধার তৎপরতার হালনাগাদ তথ্য জানতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রদেশগুলোর গভর্নরদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদও মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, মার্কিন সরকার সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড় পর্যবেক্ষণের মধ্যে রেখেছে এবং তুরস্ক-সিরিয়াকে যে কোনো সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]