যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে যেয়ে নারীরা এখন ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি ফোকাস করে। কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন হওয়ার পর তারা বিয়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়। আত্মনির্ভরশীল হওয়ায় নিজের বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন নিজে। এতে করে দেখা যায় পরিবার শুরু করতে দেরি হয়ে যায়। যার ফলে অনেক নারী বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগে থাকে।
অনেক একটা বিষয় মাথায় রাখে না যে বায়োলজিক্যাল ক্লক করো জন্য অপেক্ষা করে না। এতে করে যখন সে নিজেকে স্বাবলম্বী মনে করে অর্থাৎ বিয়ের জন্য উপযুক্ত মনে করে তখন দেখা যায় সময় অনেক গড়িয়ে গিয়েছে। এজন্য প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়টি মাথায় রাখা অনেক জরুরি।
যেভাবে ত্বক, চুল বা শরীরের যত্ন নেওয়া হয় সেভাবে প্রত্যেক নারীর উচিত নিজের প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়ে সতর্ক হওয়া। গবেষণা বলেছ, গ্রামাঞ্চলের নারীরা ভ্যাজাইনাল ইনফেকশনের কারণে বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভোগে আর শহুরে নারীরা অনিয়মত জীবনযাপন, দেরিতে বিয়ে ইত্যাদি কারণ বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগে থাকে।
গবেষকরা বলছেন, অনিয়মিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, দূষিত পরিবেশ, ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণের কারণে গত কয়েক বছরে বন্ধ্যাত্ব বাড়ছে। এজন্য সন্তান নেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করলে স্বামী-স্ত্রীর দুজনেরই উচিত কিছু মেডিক্যাল টেস্ট করা। কারণ প্রথমে সমস্যা শনাক্ত করা সম্ভব হলে তা সমাধান করা সহজ হবে।
এছাড়া স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা , কোন বদ অভ্যাসে আসক্ত না হওয়া বন্ধ্যাত্ব দূর করতে সাহায্য করে।
বন্ধ্যাত্বের ৪টি প্রধান কারণ: নারীদের প্রধানত যেসব কারণে বন্ধ্যাত্বের সৃষ্টি হয় সেগুলো চলুন জেনে নেওয়া যাক।
বয়স: গর্ভধারণ বয়স খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। নারী ও পুরুষ দুইয়ের জন্য উর্বরতা সবচেয়ে বেশি থাকে ২০ বছর বয়সে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বরছেন, ৩৫ এর পর নারীর উর্বরতা কমতে থাকে। বয়স বাড়ার সাথে কমতে থাকে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা। আর একজন পুরুষের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা ৪০ এর পর কমতে শুরু করে।
ওজন: গর্ভধারণ বেশি ওজন বা কম ওজন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ওজন খুব বেশি কম বা খুব বেশি হলে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয় শরীরে। আর এর ফলে নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই বন্ধ্যাত্বের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়।
ধূমপান ও মদ্যপান: ধূমপান নারী ও পুরুষ দুজনেরই উর্বরতা কমিয়ে দেয়। যেসব নারীরা দীর্ঘদিন ধরে ধূমপান করে তাদের গর্ভধারণ করতে অনেক সময় লাগে। এছাড়া ধূমপানের কারণে গর্ভকালীন সময়েও তৈরি পারে সমস্যা, এমনকি মিসক্যারেজও হতে পারে।
একইভাবে পুরুষদের ক্ষেত্রেও ধূমপান বেশি করলেও উর্বরতা কমে। কারণ ধূমপান করলে স্পার্ম কাউন্ট কম হয়, স্পার্মের গুণাগুণও কমে যায়। এছাড়া অ্যালকোহল পান করলে তা স্পার্মের ওপর প্রভাব ফেলে। এমনকি ইরেক্টাইল ডিসফাংশনও হতে পারে।
দুঃশ্চিন্তা: দুঃশ্চিন্তা অনেক স্বাস্থ্য সমস্যাকে ডেকে আনে। সেই সাথে গর্ভধারণেও মারাত্মক প্রভাব ফেলে দুঃশ্চিন্তা। অতিরিক্ত চিন্তায় পুরুষের স্পার্ম কাউন্ট কমে যায়। আবার অতিরিক্ত চিন্তা নারীদের ওভুলেশনে প্রভাব ফেলে। কারণ মস্তিষ্কের কমান্ড না পেলে প্রতি মাসে এগ রিলিজ হয় না।