ফসলি জমি নষ্ট করে এবং সরকারী নিয়মনীতি উপেক্ষা করে রাজশাহীর চারঘাটে চলছে অবৈধ ইটভাটা। ফলে শুধু চাষাবাদ নয়, দুষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ। এনিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তোভুগী এলাকাবাসীর।
অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই গড়ে উঠেছে এসব অবৈধ ইটভাটা।
জানা যায়, চারঘাট উপজেলা সদর থেকে মাত্র আধা কিলোমিটার দুরে মুংলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুংলী উচ্চ বিদ্যালয়, খোর্দ্দগোবিন্দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, খোর্দ্দগোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও অনুপমপুর উচ্চ বিদ্যালয় এ ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একিবারেই সন্নিকটে প্রভাবশালী একটি সংঘবদ্ধ চক্র ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে গড়ে তুলেছেন ইটভাটা।
ইটভাটা নির্মাণের সময় থেকেই স্থানীয় এলাকাবাসী প্রতিবাদ করেও লাভ হয়নি। ক্ষমতার দাপটে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে চালিয়ে যাচ্ছেন অবৈধ ইটভাটা গুলো। ফলে অনুপমপুর এলাকার আশে পাশের আমফল ও ৬ টি বিদ্যালয়ের কমলমতি শিক্ষার্থীদের চরম ক্ষতির আশঙ্কা করছেন এলাকার সচেতন মহল।
স্থানীয়রা অবৈধ ইটভাটা বন্ধে মৌখিক ভাবে এবং লিখিত ভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন লাভ হয়নি। এতে করে অবৈধ কর্মকান্ডকারীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
নাম প্রকাশে না করা শর্তে অনুপমপুর এলাকার একজন স্কুল শিক্ষক বলেন, ইটভাটা আইন ২০১৪ এর বিধান মতে আধা কিলো মিটার এলাকার মধ্যে কোন জনবসতি ও এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলে সেখানে ইটভাটা করা যাবে না। সরকারের এমন আইন থাকার পরেও মাত্র ২শ মিটারের মধ্যে ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং আশে পাশে ব্যাপক জনবসতির বসবাস ও আমবাগান থাকার পরেও চারঘাটের অনুপমপুর এলাকায় অবৈধ ভাবে পাঁচ তারা ও ছয়তারা নামের দুটি ইটভাটা গড়ে তোলা হয়েছে। যাদের নেই কোন ধরণের বৈধ কাগজপত্র। এর পরেও তারা চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ কর্মকান্ড। এরকম ভাবে চারঘাটের মিয়াপুর, ইউসুফপুর, হলিদাগাছী, অনুমপুরসহ নিমপাড়া ইউনিয়নে গড়ে উঠা ইটভাটা গুলো সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অবৈধ কর্মযজ্ঞ।
এ ব্যপারে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা পাঁচতারা ইটভাটার মালিক শামসুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ইটভাটার বৈধ লাইসেন্স এর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অতি সন্নিকটে ইটভাটায় কমলমতি শিক্ষার্থীদের ক্ষতি সম্পর্কে তিনি বলেন, একটা কিছু করতে গেলে কিছু সমস্যা তো হয়। তবে তিনি বলেন, আমার মতো অনেকেই এভাবেই ইটভাটা নির্মান করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা সামিরা বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে ইতিমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে অবৈধ ইটভাটাগুলি চিহিৃত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
রাজশাহীর সময় / এফ কে