জমি দখলের অভিযোগে ভারতের নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে আবারও চিঠি দিয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এটি প্রকাশ্যে আসার পর নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এ অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়েছেন এ অর্থনীতিবিদ। তার দাবি, চিঠি দিয়ে তাঁকে রাজনৈতিকভাবে টার্গেট করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার বিশ্বভারতীর এস্টেট অফিসের জয়েন্ট রেজিস্ট্রার জমি ফেরত দেওয়ার আবেদন করে অমর্ত্যকে চিঠি পাঠান। চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতীর ১৩ শতাংশ জায়গা দখল করে রেখেছেন। সমীক্ষার মাধ্যমে এই তথ্য জানতে পেরেছে কর্তৃপক্ষ। ফলে সেই জমি অবিলম্বে ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে চিঠিতে।
বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীর জমি দখলের অভিযোগ এই প্রথম নয়। বছর দুয়েক আগেও একই অভিযোগে সরব হয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
এমনকি উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সরাসরি অমর্ত্য সেনের নাম উল্লেখ না করে ‘জমি চোর’ বলে আপত্তিকর ভাষায় কটাক্ষ করায় প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিলেন অনেকেই।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজে যার নামকরণ করেছিলেন, যিনি নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত, তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ মেনে নিতে পারেননি বোলপুরবাসীও। বিষয়টি নিয়ে সে সময় সরব হন মুখ্যমন্ত্রীও। এ বিষয়ে অমর্ত্য সেনের পাশে রয়েছেন জানিয়ে চিঠিও দেন তিনি।
পাশাপাশি বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপও নেন অমর্ত্য সেন। তার বাড়ির ইতিহাস ব্যাখ্যা করে সরাসরি আইনজীবীর মাধ্যমে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে চিঠি দিয়ে তাকে রাজনৈতিকভাবে টার্গেট করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ। যদিও সেই আইনি পদক্ষেপকে দুরভিসন্ধিমূলক বলে পাল্টা মন্তব্য করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
বিশ্বভারতীর দাবি, অধ্যাপক সেন বাবার নামে থাকা লিজ নিজের নামে রেকর্ড করার জন্য বিশ্বভারতীর কাছে আবেদন করায় ২০০৬ সালে বিষয়টি সামনে আসে।
এরপর প্রায় চার দফায় এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয় তার। বিশ্বভারতীর জমি নিজের বাড়ির ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে রয়েছে জানার পর অধ্যাপক সেন দখলে থাকা ১৩ ডেসিমেল জায়গা বাড়ির সামনে থেকে না নিয়ে, পেছন থেকে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন বলেও দাবি করে কর্তৃপক্ষ।
অমর্ত্য সেন বুধবার বলেছেন, তার ব্যবহৃত জায়গাটি ইজারা হিসেবে উল্লিখিত রয়েছে। তবে পুরো জমি তার বাবা আশুতোষ সেন কিনেছিলেন। সে কারণে জমি দখলের যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন তিনি।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া