সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ইসরাইল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে শনিবার (২১ জানুয়ারি) তেল আবিবে রাস্তায় নামে হাজার হাজার জনতা। খবর বিবিসির।
সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, শনিবার প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে জনসমুদ্রে পরিণত হয় রাজধানী তেল আবিব। ব্যানার ফেস্টুন হাতে নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। নেতানিয়াহু সরকারের আপিল বিভাগ সংস্কারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।
গত ২৯ ডিসেম্বর ইসরাইলের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন কট্টরপন্থি নেতা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ক্ষমতা গ্রহণের পরই বিচারব্যবস্থার সংশোধন এবং সুপ্রিম কোর্টকে দুর্বল করার একটি পরিকল্পনা হাতে নেন তিনি। নতুন ওই সংশোধনীতে সুপ্রিম কোর্টের যে কোনো সিদ্ধান্ত বাতিলের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে ইসরাইলের পার্লামেন্টকে। নেতানিয়াহুর ওই উদ্যোগের শুরু থেকে বিরোধিতা করে আসছে সাধারণ মানুষ। তাদের দাবি, ওই সংশোধনী বিচারব্যবস্থাকে দুর্বল করবে।
এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘একজন ব্যক্তিকে রক্ষায় সবকিছু করা হচ্ছে। তাকে যেন বিচারের মুখোমুখি না করা হয় তার জন্যই বিচারব্যবস্থা সংস্কার করা হচ্ছে। এটা হতে পারে না। আরেকজন বলেন, রাজনৈতিক মতবিরোধের কারণে অনেক কিছুর সঙ্গে আপনার মিল নাই থাকতে পারে। কিন্তু দেশের মূল ব্যবস্থা কোনোভাবেই পরিবর্তন হতে পারে না। এ ধরনের উদ্যোগ গণতন্ত্রের জন্য চরম হুমকি।’
এ সময় নেতানিয়াহুর দুর্নীতির বিচারের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। নেতানিয়াহু ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ হয়ে আসলেও শনিবারের বিক্ষোভ ছিল সবচেয়ে বড়। কেবল জেরুজালেম এবং হাইফাতেই ৮০ হাজারের বেশি মানুষ সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়।
গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে ইসরাইলের পার্লামেন্ট নেসেটে নতুন সরকার গঠনের বিষয়টি আস্থা ভোটে পাস হয়ে যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেন নেতানিয়াহু। আস্থা ভোটে পার্লামেন্টের ১২০ সদস্যের মধ্যে ৬৩ জন নতুন সরকারের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন; আর বিপক্ষে ভোট দেন ৫৪ জন।
নেতানিয়াহু এর আগে ১৯৯৬ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল এবং ২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তিনি তৃতীয় মেয়াদে ইহুদি এ দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন।