প্রেমিকের বাড়ি থেকে প্রেমের সম্পর্ক মেনে না নেয়ায় নাটোরের গুরুদাসপুরে একসঙ্গে বিষপানে করেছে প্রেমিক-প্রেমিকা। বিষক্রিয়ায় প্রেমিকার মৃত্যু হয়েছে। মৃত ওই কিশোরীর নাম রুপা খাতুন(১৫) ও তার প্রেমিক ইমন হোসেন(১৮)। রুপা গুরুদাসপুরের খুবজিপুর গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেনের মেয়ে ও স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ও ইমন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার হায়দারাবাদ গ্রামের সেলিম রেজার ছেলে।
সোমবার দুপুরে ইমন ও রুপা বিষপান করে। গুরুতর অবস্থায় তাদের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে রুপার মৃত্যু হয়। অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যার আগে প্রেমিক ইমনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছয় মাস আগে ফেসবুকের মাধ্যমে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার হায়দারাবাদ গ্রামের ইমন হোসেনের সাথে গুরুদাসপুর স্কুলছাত্রীর রুপার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত রোববার (১৫ জানুয়ারি) খুবজিপুরে ইমন গোপনে রুপার সাথে দেখা করতে আসে। এদিন তারা দুজনে বিয়ের সিন্ধান্ত নেন। বিষয়টি দুই পরিবারকে তারা অবহিত করে। রুপার পরিবার বিয়ে দিতে সম্মত হলে ইমনের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে। কিন্ত ইমনের পরিবার এই বিয়েতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে রুপার পরিবার ইমনকে ফিরে যেতে বলে। সোমবার সকাল থেকে ইমন ও রুপা নিখোঁজ হয়। পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে না নেয়ায় দুপুরে অভিমানে বাড়ির অদূরে এক নির্জন জায়গায় দুজনে একসঙ্গে বিষপান করে। এসময় প্রতিবেশিরা তাদের দুজনকে উদ্ধার করে গুরুদাসপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। বিকেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রুপাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে প্রেমিক ইমন হেসেনকে আশঙ্কা জনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
গুরুদাসপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক শামীমা আফরোজ জানান, জরুরী বিভাগে আসার পর বাঁচানোর চেষ্টা করা হলেও মেয়েটির মৃত্যু হয়। ছেলেটির অবস্থা আশংখ্যা জনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে রামেকতে পাঠানো হয়েছে।
সিদ্দিকুর রহমান নামে রুপার এক প্রতিবেশি তার পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, ইমনের বিষপানের বিষয়ে মুরাদনগরে তার মাকে জানানো হলে তিনি ছেলের বাবা বাসায় এলে ঘটনাটি জানাবেন বলে ফোন রেখে দেন।
গুরুদাসপুর থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ মশিউর রহমান বলেন, এঘটনায় গুরুদাসপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। প্রেমিক ইমনের অবিভাবক না থাকায় গুরুদাসপুর থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে।