বিশ্বে ‘ন্যায়বিচার’ প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশকে পাশে চায় যুক্তরাষ্ট্র


অনলাইন ডেস্ক : , আপডেট করা হয়েছে : 16-01-2023

বিশ্বে ‘ন্যায়বিচার’ প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশকে পাশে চায় যুক্তরাষ্ট্র

বেইজিং ও মস্কোর সঙ্গে দূরত্ব রেখে ওয়াশিংটনের সঙ্গে বন্ধুত্ব শক্তিশালী করতে এবং বিশ্বে শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশকে পাশে চায় যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের মতো মূল্যবোধগুলোকে সমুন্নত রাখার বার্তাও দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু।

শনিবার রাতে ঢাকায় এসে পৌঁছানোর পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের বাসায় নৈশভোজে অংশগ্রহণ করেন ডোনাল্ড লু। রবিবার (১৫ জানুয়ারি) সারা দিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পাশাপাশি পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ হয় মার্কিন কর্মকর্তার।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে ডোনাল্ড লু সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এখানে এসেছি দুই দেশের বন্ধুত্বকে শক্তিশালী করতে, যখন বর্তমান বিশ্ব শান্তি ও ন্যায়বিচারের জন্য সংগ্রাম করে চলেছে।’  

কোনও বিদেশি অতিথি যখন ঢাকায় এসে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেন, তখন তারা শুরুই করেন ‘বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করেছে’, এই বলে। কিন্তু ডোনাল্ড লুয়ের বক্তব্যে বাংলাদেশের উন্নতির বিষয়ে প্রশংসাসূচক মন্তব্য ছিল না। এ থেকে বোঝা যায় যে তুষ্টের নীতি নয়—বরং ফলাফলে বিশ্বাসী আমেরিকানরা।

যুক্তরাষ্ট্রের বার্তার বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘আমার ধারণা তার সফরের প্রেক্ষাপট হচ্ছে—পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক পাওয়ার পলিটিক্স এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি।’

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে অস্বস্তিকর সম্পর্ক, অথবা ইউক্রেন যুদ্ধকে ওয়াশিংটন কীভাবে দেখে—এটি কারও অজানা নয় এবং এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কীভাবে বিশ্বকে পর্যালোচনা করে, সেটি ডোনাল্ড লু জানতে চাইতে পারেন, এটি খুব স্বাভাবিক বিষয়—বলে জানান সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব।

শহীদুল হক বলেন, ‘বিশ্বে এখন নতুন প্রভাব বলয় তৈরি হচ্ছে এবং এ ধরনের ঘোলাটে পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হবে। এখন যেটি বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন সেটি হচ্ছে—একটি ভারসাম্য অবস্থান তৈরি করা, যেটি সবার কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়।’

ন্যায়বিচার

সফরের বিষয়ে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, ‘‘ডোনাল্ড লুয়ের প্রথম বক্তব্যে ‘ন্যায়বিচার’ শব্দটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই শব্দের মধ্যে মানবাধিকার, গণতন্ত্রসহ সব মূল্যবোধকে বোঝায়।’’

বাংলাদেশের রাজনীতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, আইনি কাঠামো যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার বিষয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তার সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক হয়েছে। এখান থেকে বোঝা যায় যুক্তরাষ্ট্র কোন কোন বিষয়ে আগ্রহী।’

হুমায়ুন কবির বলেন, ‘র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞার ফলে অনেক উন্নতি হয়েছে এবং বাংলাদেশ এখনও যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারিতে রয়েছে। যদি এখানকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ভিন্ন পরিস্থিতি হয়, তবে ভবিষ্যৎ শাস্তির আশঙ্কা থেকেই যায়।’

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অনেক বেশি যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ অঞ্চলে ওয়াশিংটনেরও অনেক স্বার্থ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ হচ্ছে একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ, যেখানে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ আছে। এ সম্পর্কটিকে সেভাবে মূল্যায়ন করা হলে দুইপক্ষের জন্যই ভালো হবে।’


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]