বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মূল্যবৃদ্ধি এক গুরুতর সমস্যা হিসাবে দেখা দিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে আর্জেন্টিনাও। এই দেশ লাতিন আমেরিকার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। কিন্তু বিশ্বে মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মেসির দেশ। ২০২২ সালে সেখানে মূল্যবৃদ্ধি প্রায় ৯৮.৪ শতাংশ।
২০২১ সালের তুলনায় সেখানে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে ৫০.৯ শতাংশ। সে দেশের সরকারের আশঙ্কা ২০২৩ সালে এই মূল্যবৃদ্ধি পৌঁছে যেতে পারে ৬০ শতাংশে। এই পরিস্থিতিতে বাজারে যাওয়া আতঙ্কের হয়ে উঠতে আর্জেন্টিনাবাসীর কাছে। দুধ, তেল, চিনির মতো নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সে দেশে প্রতি মাসে বাড়ছে। এমনকি প্রতি সপ্তাহেই বেড়ে চলেছে। গত বছর থেকেই এই ধারা অব্যাহত। এর পাশাপাশি জামা-কাপড়, জুতো, প্রসাধনী দ্রব্য, হোটেল ভাড়া, পরিবহণের খরচ বৃদ্ধি তো রয়েইছে।
এক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদনে ২০২২ সালে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কত শতাংশ বেড়েছে তার হিসাব দেওয়া হয়েছিল। সেখানে দেখা যাচ্ছে, দুধের দাম বেড়েছে ৩২০ শতাংশ। ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে ৪৫৬ শতাংশ। চিনির দাম বেড়েছে ৪৯০ শতাংশ। জুতো, জামাকাপড়ের দাম বেড়েছে ১২০ শতাংশেরও বেশি। হোটেল, রেস্তোরাঁর খরচ বেড়েছে ১০৯ শতাংশ। জুনিয়ান রাত্তা নামের এক আর্জেন্টানই বলেছেন, "বাজারে এসে সব্জি কিনলে মনে হচ্ছে গয়না কিনছি। খুব খারাপ সময় কাটাচ্ছি।"
আর্জেন্টিনায় এ রকম ভয়াবহ পরিস্থিত আগে তৈরি হয়েছিল ১৯৯১ সালে। কার্লোস মেনেমের শাসনকালে সে দেশে ১৭১ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল। এখনকার মূলবৃদ্ধির বেশ কিছু কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ধারাবাহিক ভাবে আয়ে ঘাটতি, ক্রমাগত অবমূল্যায়নের পাশাপাশি দেশের বাইরের কিছু কারণও এই মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবও সে দেশের শস্য এবং জ্বালানিতে পড়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এর পাশাপাশিল সে দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হারেও ধাক্কা খেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জিডিপির গ্রোথ সেখানে কমেছে প্রায় ৫ শতাংশ। ফ্রান্সকে হারিয়ে এ বছর বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা। এতে তাঁদের ট্রফি সংখ্যাও বদল এলেও অর্থনীতির দুরাবস্থা বদলাতে পারেনি।