জয়পুুরহাটে খেঁজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা


নিরেন দাস, জয়পুুরহাট প্রতিনিধি , আপডেট করা হয়েছে : 12-01-2023

জয়পুুরহাটে খেঁজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা

শীত বাড়তে থাকায় জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে খেঁজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। আর সেই রস থেকে বাগানেই তৈরি করা হচ্ছে সুস্বাদু গুড়। পিঠাপুলি তৈরিতে খেঁজুর রসের খাঁটি গুড় কিনতে প্রতিদিন বাগানে ভিড় করছেন ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে কনকনে তীব্র শীত উপেক্ষা করে খেজুর গাছের পরিচর্যাসহ মাটির হাঁড়ি ঠিলা লাগাতে দেখা যায় এক গাছিকে। ভোরের আলো ফোটার আগেই গাছিরা ছুটছেন খেঁজুর গাছে বেঁধে রাখা মাটির ঠিলাতে ফোঁটা ফোঁটা করে সংগ্রহ করা রস নামাতে। গাছ থেকে সংগ্রহ করা রস নামিয়ে একত্র করছেন। এরপর টিনের পাত্রে ঢালছেন ছাঁকনিতে করে। কয়েক ঘণ্টা জ্বালিয়ে রূপান্তরিত করা হচ্ছে গুড়ে। পরে টিনের পাত্র থেকে বাগান চত্বরে মাটির ছোট ছোট সাজানো পাত্রে ঢেলে কিছুক্ষণ ঠান্ডা করলেই পরিণত হয় নালি গুড়ে। আর তৈরিকৃত সুস্বাদু গুড় ক্রয়ে দূরদূরান্ত থেকে আক্কেলপুরে ছুটে আসছেন ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা।

আক্কেলপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভায় অবস্থিত খেজুর গাছগুলোর পরিচর্যার মাধ্যমে শীতজুড়ে গুড় উৎপাদন করছেন গাছিরা। শীতে পিঠাপুলি তৈরিতে খেজুর রসের খাঁটি গুড় সংগ্রহে ছুটছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় ক্রেতারা জানান, ভোর রাত গাছ থেকে রস নামিয়ে বাগানেই আগুন জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করা হয়। কিন্ত শুধু রস দিয়েই গুড় তৈরি হচ্ছে নাকি চিনি মিশ্রিত করা হয় তা আমাদের জানা নেই। তারপরেও আমরা বিশ্বাস করে সুস্বাদু খেজুর গুড় গুলো কিনছি।

উপজেলার সোনামুখি ইউনিয়নের কাঁঠাল বাড়ি এলাকায় অবস্থিত আক্কেলপুর-তিলকপুর সড়কে সারি সারি খেজুর গাছ সেই গাছগুলোতে পরিচর্যার করছিলেন পৌরসভার শান্তা গ্রামের মো.শিপন মন্ডলের ছেলে গাছি মো. বুলবুল মন্ডল তার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, খেজুর গাছ পরিচর্যার প্রথম অবস্থায় গাছের ৩ ভাগের এক ভাগ কেটে নিতে হয়। কাটার দিন  থেকে ৩/৪ দিন পর রস সংগ্রহ শুরু হয়। এসময় প্রথম অবস্থায় ৩ থেকে ৪ কেজি করে রস পাওয়া যায় এবং রস সংগ্রহ পুরনো হলে ওই গাছ থেকেই ৫ থেকে ৭ কেজি পর্যন্ত রস পাওয়া যায়। আমি এবার ১৬ টি গাছে ঠিলা লাগিয়ে রস সংগ্রহ করছি। গ্রামে গ্রামে ঘুরে অতি ভোরের খেজুরের রস প্রতি কেজি ৪০ টাকা দরে বিক্রয় করি পাশাপাশি রস দিয়ে নির্ভেজাল সুসাদু গুড় তৈরি করে বিক্রয় করি।গুড়ে কোনো প্রকার ভেজাল দেয়া হয় না। এখন শীত বাড়ছে তাই গুড় উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।

গাছি আরও বলেন প্রতি বছর বাংলা মাসের পৌষ থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত খেজুর রস সংগ্রহ করা যায়। রস যদি লাল রংএর হয় ৫ কেজি তে ১ কেজি গুড় পাওয়া যায়। আমি চার বছর ধরে রসের ব্যবসায় ভালো টাকা আয় করে সংসার চালাচ্ছি।

এবিষয়ে আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস. এম হাবিবুল হাসান বলেন, আক্কেলপুর উপজেলায় প্রতি বছরের মতো এবারো খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরি করা হচ্ছে। তবে গুড়ে যেন ভেজাল মেশাতে না পারে সে বিষয়েও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]