আল্লাহ ৬ শ্রেণির মানুষের জান্নাতের জিম্মাদার


ধর্ম ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 12-01-2023

আল্লাহ ৬ শ্রেণির মানুষের জান্নাতের জিম্মাদার

চিরস্থায়ী ভোগ-বিলাসের স্থান জান্নাত। জান্নাতের বর্ণনা দিতে গিয়ে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘মহান আল্লাহ বলেছেন, আমি আমার নেককার বান্দাদের জন্য এমন জিনিস তৈরি করে রেখেছি, যা কোনো চোখ দেখেনি, কোনো কান শোনেনি এবং যার সম্পর্কে কোনো মানুষের মনে ধারণাও জন্মেনি। তোমরা চাইলে এ আয়াতটি পাঠ করতে পারো, ‘কেউ জানে না, তাদের জন্য তাদের চোখ শীতলকারী কী জিনিস লুকানো আছে।’ (বুখারি: ৩২৪৪)

যার মধ্যে ছয়টি আমল এমন আছে, যার কোনো একটিতে অভ্যস্ত ব্যক্তি আমল চলাকালীন মৃত্যুবরণ করলে আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাতের জিম্মাদার হয়ে যান। হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেই ছয় ব্যক্তির কথা এভাবে ঘোষণা করেছেন-

১. ইসলাম প্রতিষ্ঠায় প্রাণ উৎসর্গকারী: সর্বস্তরে ইসলামি অনুশাসন ও বিজয়ী আদর্শ হিসেবে ইসলামকে প্রতিষ্ঠার জন্য যারা প্রচেষ্টায় নিয়োজিত থাকেন এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে আন্দোলন ও সংগ্রামের সে পথেই মৃত্যুবরণ করেন তাহলে তাদের জন্য আছে কাঙ্ক্ষিত সেই জান্নাতের সুসংবাদ। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি দীন প্রতিষ্ঠার জন্য বের হয়, সে যদি এ অবস্থায় মারা যায় তবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো আল্লাহ তাআলার দায়িত্ব।’

২. দাফন-কাফন ও জানাজায় অংশগ্রহণকারী: মৃত ব্যক্তির দাফনের আগ পর্যন্ত তার দৈহিক মর্যাদা নিশ্চিত করা জীবিতদের কর্তব্য। শরিয়তে এর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। মৃতকে গোসল করানো ও জানাজার নামাজ পড়ার স্বতন্ত্র ফজিলতও আছে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওই হাদিসে ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি জানাজার সঙ্গে যায়, (জানাজা ও দাফন কাজে শরিক হয়) সে এমন অবস্থায় মারা যায় তাহলে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো আল্লাহ তাআলার দায়িত্ব।’

৩. রোগীর সেবাকারী: ইসলাম রোগীর সেবা শুশ্রূষা মহান ইবাদত। ওই হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রোগীর সেবায় নিয়োজিত, সে যদি এ অবস্থায় মারা যায় তবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো আল্লাহ তাআলার দায়িত্ব।’

৪. উত্তমরূপে অজু করার পর মসজিদে গমনকারী: পবিত্রতা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হলো অজু। একজন মুমিন যখন উত্তমরূপে অজু করে মহান হুকুম নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদের দিকে গমন করে তখন আল্লাহ তাআলা ওই বান্দার প্রতি অনেক খুশি হন। ওই হাদিসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে নামাজের উদ্দেশ্যে গমন করে, সে যদি এ অবস্থায় মারা যায় তবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো আল্লাহ তাআলার দায়িত্ব।’

৫. আলেম ও ন্যয়পরায়ন শাসককে সম্মান করা ব্যক্তি: ওলামায়ে কেরাম ও নীতিবান শাসকরা দেশ ও ধর্মের অনেক বড় সম্পদ। ইসলামে নীতিবান শাসক ও আলেমদের সম্মান করতে আদেশ করা হয়েছে। তাদের অসম্মান ও হেয়প্রতিপন্ন করা কিংবা তাদের বিরুদ্ধাচরণ করা গুরুতর পাপ ও অন্যায়। তাদের সম্মান করার বিশেষ ফজিলতও ওই হাদিসে ঘোষিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যদি কোনো ব্যক্তি নীতিবান শাসক ও আলেমকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং সম্মান দেখাতে আসে, সে যদি এ অবস্থায় মারা যায় তবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো আল্লাহর দায়িত্ব।’

৬. গিবত ও রাগারাগি থেকে বাঁচতে ঘরে অবস্থানরত ব্যক্তি: রাগ, ক্ষোভ, পরনিন্দা ও প্রতিশোধস্পৃহা মন্দ মানুষের স্বভাব। এ ধরনের পাপ থেকে সীমিত চলাফেরা আর পরিমিত কথাবার্তা অনেকটাই বিরত রাখে। তাই প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না থেকে ঘরে অবস্থান করাই উত্তম। এ ধরনের মন্দ আচরণ থেকে যারা বিরত থাকবে তাদের ব্যাপারেও ওই হাদিসে জান্নাতের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি তার ঘরে অবস্থান করে, কোনো মুসলিমের গিবত করে না, তার সঙ্গে রাগ করে না অথবা তার কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করে না, সে যদি এ অবস্থায় মারা যায় তবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো আল্লাহর তাআলার দায়িত্ব।’ (সিলসিলা সহিহাহ: ৩৩৮৪)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জান্নাতে যাওয়ার সব পথ ও পন্থা অবলম্বন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]