শীতের সময় শ্বাস ছাড়লেই দেখবেন নাক বা মুখ থেকে একরাশ ধোঁয়া বের হল। বিশেষ করে বেশি ঠান্ডার সময় এমনটা তো হয়ই। পাহাড়ি এলাকায় প্রবল ঠান্ডার সময় গেলে দেখবেন, কথা বলার সময়েও মুখ থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। ছোটবেলায় তো এই নিয়ে ধোঁয়া-ধোঁয়া খেলাও হত। কিন্তু কখনও মনে হয়েছে এর পেছনে আসল কারণটা কী? কেন ঠান্ডার সময় নাক-মুখ থেকে ধোঁয়া বের হয়?
অনেকেই বলেন, ঠান্ডা পড়লে এমনটা হয়। কিন্তু কেন হয় তার উত্তর অনেকেই দিতে পারবেন না। বিজ্ঞান বলছে, এর পেছনে কারণ আছে। পুরোটাই বিজ্ঞানসম্মত। কী সেই কারণ?
আমরা যখন শ্বাস নিই তখন বাতাস থেকে অক্সিজেন সহ আরও অনেক গ্যাস টেনে নিই। তার মধ্যে নাইট্রোজেন, আর্গনও থাকে। আমাদের ফুসফুস শুধু অক্সিজেন গ্যাসই ছেঁকে নেয় বাকিগুলো বের করে দেয়। শ্বাস ছাড়ার সময় তাই কার্বন ডাই অক্সাইড সহ বাকি গ্যাসগুলো বাইরে বেরিয়ে যায়।
শ্বাস ছাড়ার সময়ে এই কার্বন ডাই অক্সাইড বাতাসে মিশে গিয়ে বুদবুদ তৈরি করে। যদি ঠান্ডার সময় হয় তাহলে তাপমাত্রা কম থাকে। ফলে নিঃশ্বাসের সঙ্গে বেরনো গ্যাস এবং নাক-মুখ থেকে বেরনো জলীয় কণা বাতাসে মিশে গিয়ে জলীয় বাষ্প তৈরি করে। তখন ধোঁয়ার মতো মনে হয়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, নিঃশ্বাসের সঙ্গে যে গ্যাস বের হয় সেটা হয় গ্যাসীয় আকারে থাকে, না হলে জলীয় অবস্থায় চলে যায়। সেটা নির্ভর করে পরিবেশের তাপমাত্রা কেমন রয়েছে। যদি গরমকাল হয় তাহলে নিঃশ্বাসের সঙ্গে বেরনো গ্যাস জলীয় অবস্থায় চলে যায়, তখন আর ধোঁয়ার মতো মনে হয় না।
কিন্তু শীতের সময় বা পরিবেশের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে নীচে নেমে গেলে তখন গ্যাস কঠিন অবস্থায় বা বাষ্পীয় অবস্থায় চলে যায়। অসংখ্য কণা একসঙ্গে জড়ো হয়ে বাষ্প তৈরি করে। তখন নিঃশ্বাস ছাড়লে মনে হয় একরাশ ধোঁয়া বের হল।
এবার থেকে শীতের সময় যখন মুখ থেকে ধোঁয়া বের করে আনন্দ পাবেন, তখন এর বিজ্ঞানসম্মত কারণটাও মনে থাকবে।