প্রথম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পারবে মেয়েরা। বিপুল বিক্ষোভের পরে ‘দয়া করে’ এইটুকু ছাড়ের কথা ঘোষণা করল আফগানিস্তানের তালিবান সরকার। তবে ওইটুকুই, ক্লাস সিক্স। উচ্চশিক্ষার কোনও সুযোগ মিলবে না।
তালিবানের শিক্ষা মন্ত্রকের তরফে ইতিমধ্যেই একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সেখানে ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস সিক্স পর্যন্ত পড়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে মেয়েদের। তবে সেখানে একথাও উল্লেখ করা আছে, স্কুলের পোশাক পাশ্চাত্য কায়দায় হওয়া চলবে না। ইসলামিক রীতি মেনে পোশাক পরেই স্কুলে যেতে হবে।
নতুন বছরেই দুঃসংবাদ দিয়েছিল তালিবান। জানিয়েছিল মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে হবে দেশে। এই ঘোষণার পরেই বিক্ষোভের প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গেছিল আফগানিস্তানে। বিশ্বের দরবারেও মুখ পুড়েছিল আফগানিস্তানের। এমনকি মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলিও তালিবান সরকারের এই ফতোয়ার কড়া নিন্দা করে। সেই চাপে পড়েই শেষমেশ প্রথম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার অনুমতি দেওয়া হল বলেই মনে করছেন অনেকে।
২০২১ সালের অগস্ট মাসে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালিবান। তার পরে থেকেই একের পর এক ফতোয়ায় দমবন্ধ হয়ে আসতে থাকে মেয়েদের। হিজাব, বোরখা ছাড়া মহিলাদের বাড়ির বাইরে বেরোনো নিষিদ্ধ হয়। পরিবারের কোনও পুরুষ সদস্য ছাড়া একা বেরোনোর ক্ষেত্রেও কড়া বিধি জারি হয়। পার্ক, জিমে যাওয়া বন্ধ হয়। নিষিদ্ধ হয় চাকরি। অবশেষে মেয়েদের পড়াশোনাও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন এই বিষয়ে সরব হয়। জানায় ২০২৩ সালে এমন সিদ্ধান্ত লজ্জাজনক। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ জি-৭ অন্তর্ভুক্ত দেশগুলি জানিয়ে দেয়, মহিলাদের শিক্ষা নিয়ে ফতোয়া না তুললে আফগানিস্তানকে তারা কোনওভাবে সাহায্য করবে না। এদিকে দেশজুড়েও বাড়ছিল বিক্ষোভ-প্রতিবাদ। পুরুষ পড়ুয়ারাও পথে নামে, একের পর এক অধ্যাপক পদত্যাগ করতে থাকেন।
শেষমেশ ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে আংশিক নমনীয় হল তালিবান। এবার দেখার বিষয়, ষষ্ঠ শ্রেণির পরেও মেয়েদের আরও পড়াশোনার অনুমতি মেলে কিনা।