কলকাতা বইমেলায় যোগ দেবেন বাংলাদেশের ৭১ জন প্রকাশক। আসবেন গায়ক-গায়িকা এবং সাহিত্যিকরাও। আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সল্টলেকের বইমেলা প্রাঙ্গনে বসবে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার আসর। সেখানেই বাংলাদেশের জন্য আলাদা প্যাভিলিয়ন থাকবে। সেই প্যাভিলিয়নে যোগ দেবেন বাংলাদেশের ৭১ জন প্রকাশক।
বইমেলার অন্যতম সংগঠক ত্রিদিব কুমার চট্টোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, 'আমরা সবচেয়ে বড় প্যাভিলিয়ন বাংলাদেশকে দিই। বাংলাদেশ এবার থিম দেশ নয়। তা সত্ত্বেও বড় প্যাভিলিয়ন থাকছে ওদের জন্য। বাংলা একাডেমি তো থাকছেই। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রমুখ প্রকাশকরাও যোগ দেবেন।' শুধু প্রকাশকরাই নন, আসছেন বাংলাদেশের সাহিত্যিক ও গাইয়েরাও। ত্রিদিব বলেছেন, 'রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, অদিতি মহসিনরা আসবেন। আরও কয়েকজন সঙ্গীতশিল্পী আসবেন।' ত্রিদিব জানিয়েছেন, 'সাহিত্যিকদের মধ্যে আনিসুল হক, সাদাত হোসেন, সেলিনা হোসেনের মতো ১২ থেকে ১৪ জন সাহিত্যিক আসবেন।
বইমেলায় অন্যবারের মতো রাশিয়া আছে, কিন্তু ইউক্রেন নেই। আছে ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ফ্রান্স, ইটালি, অস্ট্রেলিয়া, কিউবা, অন্য ল্যাটিন অ্যামেরিকার দেশগুলির বইয়ের প্রকাশকরা। বইমেলার সংগঠক সুধাংশু কুমার দে ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, 'থাইল্যান্ড এই প্রথমবার কলকাতা বইমেলায় অংশ নিচ্ছে।
প্রশ্ন চিল, রাশিয়াকে নিয়ে কি কোনো সমস্যা হচ্ছে, বিশেষত এই যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে? ত্রিদিব জানিয়েছেন, 'রাশিয়া প্রতিবারই বইমেলায় যোগ দেয়। এবারও দিচ্ছে। ইউক্রেন কোনোবারই আসে না। এবারও আসছে না। এর সঙ্গে যুদ্ধের কোনও যোগ নেই। সাহিত্যিকরা চিরকালই যুদ্ধবিরোধী। বইমেলার সঙ্গে যুদ্ধের দূরতম যোগও নেই।' এছাড়া ভারতের প্রায় সব রাজ্যের প্রকাশকরাই বইমেলায় আসছেন।
এবার বইমেলার থিম দেশ হল স্পেন। দিল্লিতে স্পেনের রাষ্ট্রদূত জোস মারিয়া রিডাও ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, 'স্পেনের প্যাভিলিয়ন হবে অভিনব। পরিবেশের কথা ভেবে, পুনরায় ব্যবহার করা যায়, এমন সব জিনিস দিয়ে প্যাভিলিয়ন বানানো হচ্ছে। স্পেন থেকে প্রচুর সাহিত্যিক ও প্রকাশক আসছেন। ভারতীয় প্রকাশকদের সঙ্গে তারা আলোচনায় বসবেন।'
রিডাও একটা অভিনব প্রস্তাবও দিয়েছেন। তা হল, ভারত থেকে স্প্যানিশ ভাষায় বইবের করা। তার জন্য স্পেনের সরকার অর্থও দেবে। স্পেনের বইয়ের অনুবাদ যেমন প্রকাশ করা হবে। তেমনই মূল স্প্যানিশ ভাষার বইও প্রকাশিত হবে। রাডিওর কথায়, আমরা ভারতের সঙ্গে স্থায়ী সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যিক সম্পর্ক চাই।
বইমেলায় এবার এশিয়াটিক সোসাইটি পুরনো পুঁথির একটি স্টল দেবে। সেখানে এশিয়াটিক সোসাইটির কাছে থাকা দুর্লভ পুঁথি দেখতে পারবেন সাধারণ মানুষ। ত্রিদিব ও সুধাংশুর দাবি, পুঁথির প্রদর্শণী এবারের অন্যতম আকর্ষণ হতে চলেছে।
এবারের বইমেলা হবে গতবারের তুলনায় অনেকটা বড়। সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কের এলাকাটা বইমেলা প্রাঙ্গণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বইমেলা প্রাঙ্গণের বইমেলার উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে থাকবেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এবং স্পেনের একজন সাহিত্যিক।
ত্রিদিব জানিয়েছেন, এই প্রথমবার বইমেলা পুরোপুরি ডিজিটাল হবে। মেলার প্রতিটি অনুষ্ঠান, আলোচনা তো বটেই, বইমেলায় বিভিন্ন স্টলের আলোচনা, বইপ্রকাশের মতো ইভেল্ট সরাসরি ডিজিটাল মাধ্যমে লাইভে দেখানো হবে।