বাংলাদেশের সাড়ে আট লাখের বেশি অতিদারিদ্র্য মানুষের টেকসই উন্নয়নে প্রায় ২৩ মিলিয়ন ইউরো অনুদান দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২৫০ কোটি টাকার বেশি। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ইইউ।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিকেএসএফ ভবনে অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ‘পাথওয়েজ টু প্রসপারিটি ফর এক্সট্রিমলি পুওর পিপল- ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. নমিতা হালদার। আর ইইউয়ের পক্ষে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউয়ের হেড অব কোঅপারেশন মাওরিজিও চায়ান।
চুক্তির আওতায় ইইউয়ের কাছ থেকে মোট ২২ দশমিক ৮১ মিলিয়ন ইউরো পাবে পিকেএসএফ। দেশের অতিদারিদ্র্যপ্রবণ ১২ জেলার ১৪৫টি ইউনিয়নে ২ লাখ ১৫ হাজার অতিদারিদ্র্য খানাভুক্ত ৮ লাখ ৬০ হাজার মানুষকে সহায়তা করবে এ প্রকল্প। এর লক্ষ্য এই জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা বাড়িয়ে সমৃদ্ধির পথে অগ্রগতি নিশ্চিত করা।
উত্তর-পশ্চিমের নদীতীরবর্তী বন্যাপ্রবণ অঞ্চল রংপুর, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী ও গাইবান্ধা জেলা; দক্ষিণ-পশ্চিমের ঘূর্ণিঝড় ও লবণাক্ততাপ্রবণ অঞ্চল খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী ও ভোলা জেলা; উত্তর-পূর্বের হাওরাঞ্চল কিশোরগঞ্জ এবং উত্তরাঞ্চলের কিছু নির্বাচিত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী-অধ্যুষিত এলাকায় প্রকল্পটি কাজ করবে। এর আওতায় অতিদারিদ্র্য জনগোষ্ঠীর জীবিকায়ন ও উদ্যোগ উন্নয়ন, পুষ্টি ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, কমিউনিটি মোবিলাইজেশনের মাধ্যমে সেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা হবে। একই সঙ্গে প্রতিবন্ধিতা একীভূতকরণ, জলবায়ু সহনশীলতা সৃষ্টি এবং নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করবে এই প্রকল্প।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্য সরকারের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) এবং ইইউয়ের যৌথ অর্থায়নে এই প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়। চার বছরের মাথায় ব্রিটিশ সরকার অর্থায়ন থেকে সরে যাওয়ার পর বাড়তি তহবিল জোগান দিয়ে প্রকল্পটি আরও তিন বছর অব্যাহত রাখতে চুক্তি করেছে ইইউ। বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং পিকেএসএফের সঙ্গে এ সংক্রান্ত পৃথক দুটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ইইউ।