নওগাঁর রাণীনগরে বাবু (২৮) নামে এক শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যায় মরদেহ উদ্ধার করে শনিবার ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই প্রতিবন্ধীর মৃত্যু ঘিরে এলাকায় নানান গুঞ্জন চলছে।
স্থানীয়রা জানান, গত ২০০৯সালে উপজেলার আবাদপুকুর কুতকুতি তোলার মোড়ের অদুরে পেট্রল পাম্পের মালিক কাজল খন্দকার ওই প্রতিবন্ধীকে পাম্পে ঘোরা-ঘুরি করার সময় পেয়ে লালন-পালন করতে থাকে। এর পর প্রায় চার বছর পর বাজার সংলগ্ন মরুপাড়া গ্রামের ছোলাইমান আলীর বাড়ীতে আশ্রয় নেয় ওই প্রতিবন্ধী। পরে এলাকার লোকজন তার নাম দেয় বাবু। সেই থেকেই বাজারে সবার কাছে বাবু নামেই পরিচিত। তবে দীর্ঘ দিনেও বাবুর পরিবারের কোন সন্ধান মেলাতে পারেনি এলাকাবাসী। স্থানীয়রা বলছেন, বৃহস্পতিবার এলাকার সিলামাদার গ্রামে একটি বিয়ে অনুষ্ঠানে যায় বাবু। এরপর শুক্রবার সকালে সেখানে নাস্তাও করে। পরে দুপুর আনুমানিক আড়াইটা নাগাদ ওই গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিম-দক্ষিণ কোনে পুকুর পাড়ে একটি জিগা গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে পুলিশে সংবাদ দেয়া হলে সন্ধ্যার পর মরদেহ উদ্ধার করে শনিবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
আবাদপুকুর বাজারের ব্যবসায়ী আবু তাহের বলেন, বাবু একজন শারীরিক, বুদ্ধি ও বাক প্রতিবন্ধী। সে অধিকাংশ সময় আমার দোকানেই থাকতো। সে নিজে কখনো লুঙ্গী পড়তে পারেনা। এমনকি প্যান্ট পরলেও তাকে বেল্ট পরে দিতে হয়। সেই বাবু গাছে ওঠে গলায় মাফলার দিয়ে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করবে তা কখনো সম্ভব নয়। তিনি দাবি করে বলেন, কেউ হয়তো হত্যার পর গলায় মাফলার লাগিয়ে গাছে ঝুলে রেখেছে।
পাম্প মালিক কাজল খন্দকার বলেন, বাবুর মৃত্যু নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। সে একজন বুদ্ধি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী, কি করে সে আত্মহত্যা করতে পারে? বাবুর মৃত্যুর বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের দাবি জানান তিনি।
রাণীনগর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, একজন শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর পক্ষে এভাবে আত্মহত্যা করাটা একটু অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান তিনি।