পশ্চিম এশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর কয়েক লাখ কর্মী যান বাংলাদেশ থেকে। কিন্তু অনেকেই গিয়ে সেখানে কাজ পাচ্ছেন না। বেতন নিয়েও সমস্যা থাকে অনেকের। এ কথা জানিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেছেন, বিদেশে সর্বনিম্ন কত বেতনে বাংলাদেশের কর্মীরা যাবেন, তা ঠিক করে কাজের চাহিদাপত্র তৈরির বিষয়ে কাজ চলছে।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে ‘প্রত্যাশা’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ), আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থা (আইওএম) ও ব্র্যাক যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্রত্যাশা প্রকল্পে বিদেশ ফেরত কর্মীদের সমাজে পুনরায় স্থিত হওয়ার বিষয়ে সহযোগিতা করতে ২০১৭ সাল থেকে পাঁচ বছর বাস্তবায়িত হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘কোন দেশে কমপক্ষে কত বেতন হলে কাজের চাহিদাপত্র গ্রহণ করা হবে, তার পরীক্ষা করে দেখছে মন্ত্রণালয়।’
বিদেশে যেতে বাংলাদেশের কর্মীদের অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, ‘যে দেশে কর্মীরা যায়, সেখানে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ থাকে না। সরকারের লক্ষ্য মানুষ পাঠানো। সে কারণে অনেক কিছু হজম করে নিতে হয়। তবে অন্যায় যাতে না হয়, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।’
‘প্রত্যাশা’ শীর্ষক প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠান। ছবি: সংগৃহীতমালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী প্রতি কর্মীর যেতে ৮০ হাজার টাকার বেশি খরচ হওয়ার কথা নয়। কিন্তু রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো নিচ্ছে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা। দেশটিতে যত কর্মীর চাহিদা, তার চেয়ে ২০ গুণ বেশি কর্মীর কাছ থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে টাকা নেওয়া হয়। এসব বিষয়ে সরকার ব্যবস্থা নেবে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘ভুয়া মেডিকেল করানো ও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হলে এজেন্সিগুলোর লাইসেন্স বাতিল করা হবে।’
সৌদি আরবে বাংলাদেশের কর্মীরা যে কাজে ৮০০ রিয়াল পান, একই কাজে অন্য দেশের কর্মীরা দক্ষতার জন্য পান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ রিয়াল— এমন তথ্য দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে হবে।’
ব্র্যাকের শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন এবং অভিবাসন কর্মসূচির পরিচালক সাফি রহমান খান, আইওএম মিশন প্রধান আবদুসাত্তার এসয়েভ, ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত মিশন প্রধান ব্রেন্ড স্পেনিয়ের, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব আহমেদ মনিরুস সালেহীন, আইওএম উপদেষ্টা সাবেক পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক ও বিএমইটির মহাপরিচালক শহীদুল আলম প্রমুখ সেমিনারে বিভিন্ন পর্বে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানস্থলে একটি চিত্র প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়।