ঋতু পরিবর্তন আমাদের শরীরেও প্রভাব ফেলে। এখন চলছে শীতকাল। এই সময় মানুষ বিভিন্ন রকম রোগে আক্রান্ত হয়। সর্দি-কাশি, জ্বর-ঠাণ্ডা, গলাব্যথা ইত্যাদি আরো অনেক রকম রোগ এই সময় বেশি দেখা দেয়। এসব রোগে যে কেবল বড়রা আক্রান্ত হয় তা কিন্তু নয়। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই কমবেশি শীতে এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন।
বিশেষ করে শীতের দীর্ঘ তিন মাস নবজাতকের জন্য পেরিয়ে যাওয়া কষ্টকর। কারণ নবজাতকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই শীতকালে নবজাতকের বিশেষ যত্ন নেয়া জরুরি। তাই চলুন জেনে নেয়া যাক এসময় কোন কোন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত-
স্নান: স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখার জন্য পরিচ্ছন রাখা ও স্নান করানো গুরুত্বপূর্ণ। শীতকালে রৌদ্যজ্বল দিনে আপনার শিশুকে হালকা গরম জলে স্নান করান। অন্যান্য দিনে কেবল একটি ভেজা তোয়ালে নিন এবং কাপড় পরিবর্তন করার আগে তাদের শরীর মুছুন। এটি অসুস্থতার ঝুঁকি হ্রাস করবে এবং ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করবে।
তেল মালিশ: শীতকালের শীতল এবং শুষ্ক বাতাস বাচ্চাদের ত্বকের সমস্ত আর্দ্রতা শুষে নেয়। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে শীতের দিনে কমপক্ষে ২ বার আপনার শিশুকে তেল ম্যাসাজ করুন। তেল শরীরের গভীরতম টিস্যুগুলোতে শোষিত হয় ফলে ময়েশ্চারাইজ থাকে। অয়েলিং শিশুর হাড়কেও শক্তিশালী করে তোলে। ম্যাসাজ করতে আপনি গরম সরিষা বা নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন।
কিছুটা সময় রোদে রাখুন: সূর্যের আলো ভিটামিন ডি এর সবচেয়ে ভালো উৎস। শক্তিশালী হাড় এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান থাকে সূর্যের আলোতে। জামাকাপড় পরিবর্তন বা আপনার বাচ্চাকে স্নান করানোর পরে তার সাথে কিছুটা সময় রোদে কাটান। সূর্যের আলো জীবাণু ধংস করে শিশুর শরীরে উষ্ণতা সরবরাহ করে।
কয়েক স্তরবিশিষ্ঠ পোশাক পড়ান: নবজাতকদের কয়েক স্তরবিশিষ্ঠ পোশাক পড়িয়ে রাখুন। এটি তাপমাত্রার পরিবর্তিত পরিবর্তন অনুসারে উষ্ণ রাখতে সহায়তা করবে। দীর্ঘ হাতা শার্ট এবং তারপরে জ্যাকেট, ক্যাপ যুক্ত করতে পারেন। বাচ্চাদের জন্য সর্বদা নরম পোশাক কিনুন এবং কখনো তাদের মাথা ঢেকে রাখতে ভুলবেন না।
ভারী কম্বল এড়িয়ে চলুন: শীতের সময় বাচ্চাকে ভারী কম্বলে ঢেকে রাখা যথাযথ বলে মনে হতে পারে তবে সেটি সঠিক নয়। ভারী কম্বল তাদের উষ্ণ রাখবে তবে এগুলো অস্বস্তিকর হতে পারে। কারণ এতে শিশুরা তাদের হাত এবং পা সরানোতে অসুবিধার মুখোমুখি হবে। হালকা কম্বল ব্যবহার এবং ঘরের তাপমাত্রাকে সর্বোত্তম রাখা উচিত।
ভ্যাকসিন: শীতকালীন রোগগুলো থেকে নবজাতকের সুরক্ষা দেওয়ার সর্বোত্তম উপায় হলো তাদের টিকা দেওয়া। তাদের ভ্যাকসিনের শিডিয়ল কঠোরভাবে অনুসরণ করা উচিত। এছাড়াও যদি আপনি অসুস্থ হন, তবে শিশু থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা অত্যন্ত দুর্বল এবং এমনকি অল্প অযত্নও ক্ষতিকারক হতে পারে।