তালিবান রয়ে গিয়েছে তালিবানেই, এর প্রমাণ মিলল আরও একবার। আফতানিস্তানে এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে প্রাণদণ্ড দিল তালিবান সরকার। গত ২০২১ সালের ১৫ অগস্ট দ্বিতীয়বারের জন্য আফগানিস্তান দখল করার পর এই প্রথম তালিবান প্রশাসন কাউকে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল। জানা গিয়েছে, পশ্চিম আফগানিস্তানের এক নাগরিককে খুনের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
তালিবান সরকারের তরফেই এই তথ্য জানানো হয়েছে।
তালিবানের মুখপাত্র জ়াবিউল্লাহ মুজাহিদ জানান, পশ্চিম আফগানিস্তানের ফারাহ প্রদেশে এক ব্য়ক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সালে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সেই মামলারই বিচার করে অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে।
তালিবান সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, তিনটি আদালতে বিচারের পর এবং সুপ্রিম ধর্মীয় নেতার আদেশ অনুসারেই মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে। প্রকাশ্যেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও, তবে কীভাবে ওই ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তা জানানো হয়নি। মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়ার সময় একাধিক তালিবান প্রশাসকও উপস্থিত ছিলেন। তালিবান মুখপাত্র জানান, তালিবানের অন্তর্বর্তী মন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানি, উপ প্রধানমন্ত্রী আব্দুল ঘানি বরাদরও সাজার সময় উপস্থিত ছিলেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন আফতানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতিও।
উল্লেখ্য, ১৯৯০-র দশকে তালিবান যখন আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করেছিল প্রথমবার, সেই সময়ও কোনও অপরাধের শাস্তি হিসাবে প্রকাশ্যে চাবুক মারা থেকে শুরু করে মৃত্য়ুদণ্ড দেওয়া হত। ২০২১ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতা দখলের পর তালিবান দাবি করেছিল, এবারে তাদের শাসন পদ্ধতি সম্পূর্ণ ভিন্ন হবে। নিয়ম রীতি মেনেই নাগরিকদের স্বাধীনতা ও অধিকার দেওয়া হবে। তবে সম্প্রতিই মহিলাদের শিক্ষা থেকে শুরু করে কাজের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়। একের পর এক কড়া নিয়ম এবং তা ভঙ্গ হলেই কঠোর শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। চুরির মতো অপরাধ থেকে শুরু করে অবৈধ সম্পর্কের জন্য মহিলা ও পুরুষদের প্রকাশ্যে চাবুক মারার মতো শাস্তিও দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতিই রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার বিভাগের তরফেও আফগান সরকারকে জনসমক্ষে নাগরিকদের মারধর ও শাস্তি দেওয়া বন্ধ করার অনুরোধ করা হয়।