জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে প্রসংশা পত্র বিতরণের নামে বাড়তি অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে উপজেলার রায়কালী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রায়কালী উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০২১ সালের অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নিকট থেকে ৩ শত টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। যেখানে একটি প্রসংশা পত্র তৈরী করতে খরচ হয় ১০ টাকা। টাকা উত্তোলনের কোন সরকারি আদেশ না থাকলেও নিয়ম বহির্ভুতভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিনা রশিদে এসব টাকা আদায় করছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিদ্যালয়টি থেকে ২০২১ সালে এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে ১৩১ জন এবং উত্তীর্ণ হয়েছে ১২৬ জন শিক্ষার্থী। সেই হিসাবে ১২৬ জন শিক্ষার্থীর প্রসংশা পত্রের দাম ৩৭ হাজার ৮শত টাকা।
বুধবার ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে প্রসংশা পত্র নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থী প্রতি ৩০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। ওই টাকা না দিলে স্কুল থেকে প্রশংসাপত্র দেয়া হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এসব টাকা আদায়ের ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘গত বুধবার আমরা কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে প্রসংশা পত্র নেওয়ার জন্য গেলে আমাদের কাছ থেকে ৩ শত টাকা চাওয়া হয়। আমরা বলেছি পাঁচ বছর বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করলাম অন্তত ১ শত টাকা কম নেন, কিন্তু স্যাররা বলেন কোন টাকা কম নেওয়া যাবে না। সর্বশেষ ১০ টাকা কম নেন, তাও তারা কম নেননি। তাই আমরা প্রসংশাপত্র না নিয়েই ফিরে আসি’।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলাল হোসেন বলেন, ‘দেখুন প্রসংশা পত্র বিতরণে সকল প্রতিষ্ঠানই কম বেশি টাকা নেয়। অনেকে আবার ফ্রিতেও দেয়। আমরা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৩শত টাকা করে নিচ্ছি’।
তার নিকট ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তের রেজুলেশন দেখতে চাইলে তিনি তা দেখানোর কোন বিধান নেই বলে সাফ জানিয়ে দেন।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল জলিল মুঠোফোনে বলেন, ‘ আমি ঢাকায় অবস্থান করায় প্রসংশাপত্র বিতরণে অর্থ আদায়ের বিষয়ের আমার জানা নেই। প্রধান শিক্ষকের সাথে এ বিষয়ে কথা বলব’।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মকবুল হোসেন বলেন, ‘প্রসংশাপত্র বিতরণে অর্থ আদায়ে সরকারি কোন নির্দেশনা নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
ভারপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা অফিসার শাহাদুজ্জামান বলেন, ‘এ বিষয়ে টাকা নেওয়ার কোন প্রকার নিয়ম নেই। বিষয়টি আমরা দেখছি’।
রাজশাহীর সময় /এএইচ